বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারত-পাক সংঘাতে পশ্চিমের দেশকে একেবারে খোলাখুলি সমর্থন করেছিল তুরস্ক (Turkey)। কথা দিয়ে তো বটেই, সেই সাথে যাবতীয় সামরিক যুদ্ধাস্ত্র পাঠিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বেইমান তুর্কি! যার জেরে তুরস্ক বয়কটের ডাক দেন ভারতবাসী।
তুর্কির পাকিস্তানপ্রীতি দেখে ভারতের বহু ব্যবসায়িক সংগঠন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা তুর্কি থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করার জন্য ভারত সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও গলেনি মোম! পাকিস্তানকে জোরালো সমর্থন সত্বেও তুরস্কের সাথে বাণিজ্য বহাল রেখেছে দিল্লি। কিন্তু কেন? ঠিক কোন কোন স্বার্থে তুরস্কের সাথে ব্যবসা বন্ধ করতে পিছিয়ে যাচ্ছে ভারত? রইল তথ্য।
তুর্কি পণ্য বয়কট করেছে বহু ব্যবসায়ী
পাকিস্তানের সাথে ভারতের সংঘাত পর্ব মিটতেই তুর্কি পণ্য বয়কটের ডাক দেন দেশবাসী। আর সেই সূত্র ধরেই হিমাচল প্রদেশের আপেল উৎপাদক এবং রাজস্থানের মার্বেল ব্যবসায়ীরাও তুরস্ক থেকে আমদানির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। বহু ব্যবসায়ীই তুরস্কের পণ্য বয়কট করতে জোরালো ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তুর্কির সাথে সমস্ত ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেনি দিল্লি। কিন্তু কেন?
কেন তুরস্কের সাথে সমস্ত ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করছে না ভারত?
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুরস্কের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত 2.73 বিলিয়ন আমেরিকান ডলার। অর্থাৎ, ভারত-তুরস্কের মধ্যে আমদানি রপ্তানি ব্যাপক। তবে আচমকা যদি কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে এই বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র যে তুরস্কের ওপরে প্রভাব পড়বে তেমনটা নয়, একই সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স ও রাসায়নিকের মতো ক্ষেত্রে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, বেশ কয়েকবার তুরস্কের সাথে আমদানি বন্ধ করার অনুরোধ পেয়েছি আমরা। কিন্তু, এটা বুঝতে হবে যে, আমাদের রপ্তানিকারকদের স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে এই বাণিজ্যের সাথে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা একটি শক্তিশালী ভূ রাজনৈতিক বার্তা দিতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় আমরা কতদূর তা নিতে পারব?
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের ওই কর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী একথা স্পষ্ট যে, তুরস্কের সাথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ না করার নেপথ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক স্বার্থ। হ্যাঁ, তুর্কির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করলে পাক বন্ধুর তো ক্ষতি হবেই, সেই সাথে চরম বিপাকে পড়বেন ভারতের রপ্তানিকারকরাও। বলা বাহুল্য, 2024-25 আর্থিক বছরে তুরস্কে অন্তত 5.72 বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে ভারত। যেগুলির মধ্যে প্রায় 3 বিলিয়ন ডলারের ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রয়েছে।
অবশ্যই পড়ুন: ঘাড়ে ৭৬,০০০,০০০,০০০,০০০ টাকার ঋণের বোঝা! ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান
জানা যায়, তুরস্কের সাথে এই রপ্তানি বাণিজ্যের অন্তত 40 শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প থেকে এসেছে। একইভাবে, তুরস্ক ভারত থেকে 2.99 বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। যার মধ্যে 270.83 ডলারের সোনা ও 107 মিলিয়ন ডলারের ফল ও বাদাম রয়েছে। এমনকি আপেলের মতো ফলের আমদানি বিগত বছরগুলির তুলনায় 10 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব মিলিয়ে বলাই যায়, বাণিজ্যিক স্বার্থ ধরে রাখতেই তুরস্কের সাথে সার্বিক দিক থেকে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করতে চাইছে না ভারত।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |