India Hood Decode: একদিকে তালিবান, অন্যদিকে বালোচ! একসাথে ৫ দিক থেকে পাকিস্তান আক্রমণ

Published:

Pakistan
Follow

একদিকে তালিবানদের আক্রমণে শ’য়ে শ’য়ে প্রাণ হারাচ্ছে পাকিস্তানি সেনা। অন্যদিকে, বালোচ আর্মিদের আক্রমণ, কখনও হাইজ্যাক হচ্ছে ট্রেন, আবার কখনও বা দেশের ভিতরেই উঠছে দেশবিরোধী শ্লোগান। এক বা দুই নয়, একসাথেই পাঁচ দিক থেকে কোণঠাসা হচ্ছে পাকিস্তান (Pakistan)! প্রাণ যাচ্ছে একাধিক সেনা থেকে শুরু করে মেজর-অফিসারের।

নিশ্চয়ই শুনেছেন ধর্মের কল বাতাসে নড়ে, আর সেই প্রমাণটাই এবার দেখতে পাবেন পাকিস্তানের ক্ষেত্রে! কেউ বলছে – পাকিস্তানে এই বুঝি শুরু হল গৃহ যুদ্ধ! কেউ কেউ আবার বলছে শুরু হয়েছে অপারেশন সিঁদুর 2.0। কিন্তু আদতে কারা করছে পাকিস্তানের ওপর এই আক্রমণ? দেশের ভিতরে হোক বা বাইরে – কেন জ্বলছে আগুন? কেন চিন, আমেরিকা, সৌদি আরবের মতো বন্ধু থাকা সত্ত্বেও অসহায়ের মতো মার খেতে হচ্ছে পাকিস্তানি সেনাদের? কীভাবে ৫ দিক থেকে ঘিরে ফেলা হচ্ছে পাকিস্তানকে? আজ India Hood ডিকোডে এক এক করে সেই সমস্ত তথ্য তুলে ধরবো আপনাদের কাছে।

প্রথম কাঁটা, বালুচ আর্মি

স্বাধীনতার পর থেকেই বালুচিস্তানের বালোচদের শোষণ করে আসছে পাকিস্তান। বালুচিস্তানের ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছুই পাকিস্তানের থেকে অনেকটাই আলাদা। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ গোটা বালুচিস্তান প্রদেশ। আমেরিকার সাহায্যে পাকিস্তান সেই জায়গা থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ মাইনিং করলেও, তার বিন্দুমাত্র সুবিধা কোনোদিনই পায়নি বালুচিস্তানের জনগণ। উল্টে বালোচদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন নিয়ম-কানুন। বিভিন্নভাবে শোষিত ও অত্যাচারিত হওয়ার পর এক সময় আলাদা রাষ্ট্রের দাবি তোলে বালোচরা। নতুন রাষ্ট্রের দাবিতে তৈরি হয় বালোচ লিবারেশন আর্মি অর্থাৎ BLA। কিন্তু, তাদের দাবি পাকিস্তানে মেনে না নেওয়ায় পাকিস্তানের সেনা বাহিনীর ওপর বারবার আক্রমণ চালায় তারা। এমনকি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের Jaffar Express ট্রেন হাইজ্যাক করে নেয় BLA। পহেলগাঁও হামলার কড়া নিন্দা করে পাকিস্তানের বিরোধিতা এবং ভারতের সমর্থনও করে তারা। আজ পাকিস্তানে শুধু বালোচ লিবারেশন আর্মি নয়, সক্রিয় রয়েছে BLF, BRA, UBA, BNA, BLF-এর মতো একাধিক গোষ্ঠীও, যাদের প্রত্যেকেরই কমবেশি উদ্দেশ্য পাকিস্তান থেকে বালুচিস্তানের স্বাধীনতা।

বর্তমানে পরিস্থিতি এখন এমনই হয়েছে, যে প্রায় প্রতিদিনই চলছে বিস্ফোরণ কিংবা গুলির লড়াই। আর প্রাণ হারাচ্ছে একাধিক পাকিস্তানি সেনা।

দ্বিতীয় কাঁটা, পাকিস্তান অধিগৃহীত কাশ্মীর বা Pakistan Occupied Kashmir

পাকিস্তান কীভাবে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষদের বিভ্রান্ত করে, নিরাপরাধদের হত্যা করে কাশ্মীর অধিগ্রহণ করেছিল, সেই বিষয়ে আমরা আজ আর যাচ্ছি না। কিন্তু, স্বাধীনতার পর যে কাশ্মীরকে ভারত থেকে কেড়ে নিয়েছিল পাকিস্তান, আজ সেই কাশ্মীর পাকিস্তানের থেকে হতে চাইছে স্বাধীন।

খাদ্য ও বিদ্যুৎ বিলের সাবসিডি, সংরক্ষণ সহ প্রায় ৩৮টি দাবি নিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের শুরুতে PoK-তে Jammu Kashmir Joint Awami Action Committee (JAAC)র নেতৃত্বে একটি বৃহৎ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকান-বাজার, অবরোধ করা হয় রাস্তা। পাকিস্তানি সেনা কড়া হাতে এই আন্দোলন দমন করতে গেলে মৃত্যু হয় প্রায় ১২ জনের এবং আহত হয় প্রায় ২০০ জন আম জনতার।

শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান, আন্দোলনকারীদের সমস্ত দাবি মেনে নেয়, এবং পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে, অতীতেও একাধিকবার একাধিক দাবি নিয়ে এই ধরনের আন্দোলন দেখা গিয়েছে POK-তে। আর পাকিস্তান একাধিক প্রতিশ্রুতি মেনে সেই আন্দোলন থামালেও, কোনও কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। আর বর্তমানে পাকিস্তানের যা অবস্থা সেখানে PoK-র সমস্ত দাবি মেনে নেওয়া একরকমভাবে অবাস্তব বলে মনে করছেন অনেকেই। তাই পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আগামী দিনে এক বড়সড় আন্দোলনে নামতে পারে JAAC। আর সেই নিয়ে একরকম বড়সড় চিন্তায় রয়েছে পাকিস্তান।

তৃতীয় কাঁটা, পাকিস্তানেরই ভেতরে থাকা তেহেরেক-ই-লাব্বাইক

সময়টা ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস। পাকিস্তানের হার্ডলাইন ইসলামিস্ট পার্টি তেহেরেক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান, সংক্ষেপে TLP প্যালেস্তাইনের সমর্থনে গাজা মার্চ শুরু করে। লাহোরে প্রায় ১০,০০০ প্রতিবাদকারী ইসলামের সম্মানে, গাজার সমর্থনে, ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে একটি শান্তিপূর্ণ যাত্রা করে। লক্ষ্য আমেরিকান অ্যাম্বাসির সামনে শান্তিপূর্ণ ধর্নায় বসা।

কিন্তু, পাকিস্তান সরকার প্রথমেই ল অ্যান্ড অর্ডার বজায় রাখার জন্য এই আন্দোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবুও, এই আন্দোলন শুরু হয়। পুলিশ বাঁধা দিলেও আন্দোলন থামে না। ফলত পুলিশ আন্দোলনকারীদের রাস্তা আঁটকে দেয়, তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট দিয়ে আক্রমণ করে। প্রতিবাদকারীরা পাথর ছুঁড়ে শুরু করে পাল্টা আক্রমণ, আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশের একাধিক গাড়িতে। এরপর পুলিশ গুলি চালায় আন্দোলনকারীদের ওপর। TLP-র মতে, প্রায় ২৫০ জন আন্দোলনকারীকে পুলিশ নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। তাদের নেতা হাফিজ সাদ হোসেন রিজভি-কে তিনটি গুলি মারা হয়েছে। তিনি এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এবং এই সংগঠন ভবিষ্যতে এই নির্মম অত্যাচারের বদলা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, খাদিম হুসেইন রিজভি ২০১৫ সালে TLP শুরু করে। বর্তমানে তার ছেলেই এই সংগঠনের নেতা। এদের মূল উদ্দেশ্য ইসলাম, এবং হজরত মুহাম্মদের সমালোচনাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া। পাকিস্তানের সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক কাঠামোতে ইসলামি শরিয়ার প্রভাব বাড়ানো।

এরা বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ, ধর্মীয় আন্দোলন ও মিছিল করে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এমনকি ইমরান খান সরকারের পতনের জন্যও কিছু অংশে এদের দায়ী করা হয়। সবথেকে বড় বিষয়, এই সংগঠনকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রক্সি বলা হয়। এই সংগঠনে বর্তমানে পাক সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যও রয়েছে। ফলত, আগামীদিনে দেশের সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য বড়সড় ভূমিকা পালন করতে পারে এই সংগঠন।

চতুর্থ ও পঞ্চম কাঁটা, তেহেরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান ও আফগানিস্থানের তালিবান

সালটা ১৮৯৩। সোভিয়েত রাশিয়ার বিস্তার কমাতে আফগানিস্থান এবং ব্রিটিশ শাসিত ভারতের মধ্যে একটি সীমানা কাটা হয়, যার নাম দেওয়া হয় ডুরাণ্ড লাইন। যার দৈর্ঘ্য ছিল ২৬৪০ কিমি। এই সীমানার ফলে আফগানিস্থানের কিছু অংশ ব্রিটিশ ভারতে চলে আসে। এরপর ১৯১৯ সালে আফগানিস্থান সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন হয়। আর অন্যদিকে ১৯৪৭ সালে, ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ভেঙে তৈরি হয় পাকিস্তান ও ভারত। ফলত, আফগানিস্থানের ওই অংশ এবার চলে আসে পাকিস্তানে।

আর এরপরেই শুরু হয় সংঘাত। কারণ, আফগানিস্থান দাবি করে, ডুরান্ড সীমানা চুক্তি হয়েছিল ব্রিটিশদের সাথে, তাই ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর এই সীমানা চুক্তিও খারিজ হয়ে যাওয়া উচিত।

ডুরাণ্ড লাইনে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষই পাস্তুনি জাতির। আর, আফগানিস্থানের অধিকাংশ মানুষও পাস্তুনি জাতির। তাই আফগানিস্থান ডুরান্ড লাইনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাহ্যতা দিতে অস্বীকার করে। যার ফলে পাকিস্তান, ডুরান্ড লাইনে হঠাৎ করে আক্রমণ চালিয়ে, নির্বিচারে বহু পাস্তুনিকে হত্যা করে।

এরপর ১৯৫০ সালে ব্রিটিশরা ডুরান্ড লাইনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। তবে, আফগানিস্থান আজ পর্যন্ত এই সীমানা মেনে নেয়নি। তাই সময় বদলালেও, এই সীমানা নিয়ে উত্তেজনা কখনোই শেষ হয়নি।

এরপর সালটা ১৯৮৯। আফগানিস্থানে বাড়তে থাকে মুল্লা আমিরের জনপ্রিয়তা, যিনি তালিবান তৈরি করেন। ১৯৯৬ সালে, আফগানিস্থানে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় আসে তালিবান। যার মেয়াদ ছিল ২০০১ সাল পর্যন্ত। শুরু থেকেই আফগানিস্থানের তালিবানদের একতরফা সমর্থন করে এসেছে পাকিস্তান। কিন্তু, আমেরিকায় ৯/১১ অ্যাটাক হলে, তালিবানদের শেষ করার জন্য আফগানিস্থানে একটি অপারেশন চালায় আমেরিকা। সেই সময় মুল্লা আমির সহ একাধিক তালিবান নেতা পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়। পিছু পিছু আমেরিকাও পাকিস্তানে প্রবেশ করে। আর তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মুশারফ এই কাজে আমেরিকাকে সাহায্য করতে শুরু করে। যার ফলে পাকিস্তানের একাধিক তালিবান সমর্থক ও সংগঠন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়। যার মধ্যে একজন ছিলেন বেয়তুল্লা মেহসুদ। যিনি ২০০৭ সালে তৈরি করেন TTP গোষ্ঠী। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানে দৃঢ়ভাবে শরিয়ত ও আল্লাহ-র আইন লাগু করা, কোনও আলাদা সংবিধান নয়। ফলে শুরু হয় পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতা। আর এই কাজে সহায়তা দিতে থাকে তালিবানরা। আর সেই থেকেই শুরু হয় তালিবান ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ।

এরপর সালটা ২০২১। আফগানিস্থানে পুনরায় ক্ষমতায় আসে তালিবানরা। আর TTP-কে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় চাপানউতোর। ২০২২ সালে পাকিস্তানে TTP মোট ২৬২টি আতঙ্কবাদী হামলা চালায়। গত এক বছরে এই হামলা আরও বেড়েছে।

এমনকি পাকিস্তানের ভিতরে ও বাইরে চলতি বছরে যতগুলি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে সবথেকে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছে TTP। সম্প্রতি ২০২৫  সালের ৭ই অক্টোবর পাকিস্তানি সেনার ওপর আক্রমণ করে তারা, যার ফলে মৃত্যু ২ জন অফিসার এবং ৯ জন সৈন্যের। আর হুমকি দেয় ইসলামাবাদকে ধ্বংস করার। এর পরেই পাকিস্তানি সেনা TTP ছাউনিতে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ১৯ জনকে হত্যা করে।

এরপর ৯ই অক্টোবর, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ জানান, “যাদের থেকে TTP এত সুবিধা পায়, তাদের সাথেই শত্রুতা সহ্য করবো না। আমরা পাল্টা উত্তর দেবো। তারা যেখানেই থাকুক, তাদের আমরা শেষ করবো।“ এরপর ওইদিনই পাকিস্তানের তরফ থেকে আফগানিস্থানের পাক্তিকা এবং কাবুল প্রদেশের TTP ক্যাম্প লক্ষ্য করে এয়ারস্ট্রাইক করা হয়। পাকিস্তানি উৎস জানায়, এই হামলার পর শীর্ষ TTP কমান্ডার নুর ওয়ালি মেহসুদ সহ একাধিক নেতা নিহত হয়েছে। কিন্তু, এই আক্রমণের কিছুক্ষণ পরেই নুর ওয়ালি মেহসুদ নিজের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন।

এরপর ১০ই অক্টোবর ফের পাকিস্তানের একটি পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে হামলা চালায় TTP, যেখানে মেজর থেকে শুরু করে প্রায় ২০ জন পাকিস্তানি সৈনিকের মৃত্যু হয়।

আর আফগানিস্থানে এয়ার স্ট্রাইকের জবাবে ১১ই অক্টোবর, আফগান তালিবান ফোর্স, পাকিস্তানের একাধিক মিলিটারি পোস্টে গুলিবর্ষণ করে। আঙুর আড্ডা থেকে বারামচা পর্যন্ত ডুরান্ড লাইনের ৭টি জায়গায় চলে ননস্টপ আক্রমণ। তালিবান স্পোকসম্যান এনায়াত খোয়ারাজমি জানান, তালিবান ফোর্স, ডুরান্ড লাইনে প্রায় ২৫টি পাকিস্তানি আর্মি আউটপোস্ট দখল করেছে, এবং এই আক্রমণে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান, ২০০ জন তালিবান সেনার নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।

অন্যদিকে প্রথমবার ভারত সফরে এসেই তালিবানদের বিদেশ মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি করে ফেলেন এক বড়সড় মন্তব্য। তিনি জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসাবে উল্লেখ করেন, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় পাকিস্তান। মুত্তাকির এই বিবৃতির পর তবে কি এবার পাক অধিগৃহীত কাশ্মীর হারানোর ভয় পেতে শুরু করেছে পাকিস্তান? তবে কি এবার আফগানিস্থানের সাহায্যেই পাকিস্তানের থেকে কাশ্মীর কেড়ে নেবে ভারত?

পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কী? নিজের দেশের জঙ্গীরাই কি এবার কাল হয়ে দাঁড়াবে পাকিস্তানের জন্য?

পাকিস্তান যত খারাপই দেশ হোক, আমরা কোনোদিনই কোনও দেশের ধ্বংস চাইবো না, কারণ সব দেশেই একজন হলেও নিরাপরাধ মানুষ থাকে, আর দেশ ধ্বংস হলে সেই নিরাপরাধ মানুষেরও প্রাণ শঙ্কায় থাকে। তবে, এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যেতেই পারে পাকিস্তান গৃহযুদ্ধের কিনারে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারণ গৃহযুদ্ধের তিনটি মূল দিক থাকে, তাঁর তিনটিই পাকিস্তানে দেখা যাচ্ছে। যার মধ্যে প্রথমত, পাকিস্তানের সরকারে দুর্নীতি পূর্ণ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। দ্বিতীয়ত, দেশের অর্থনৈতিক অবনতি ঘটেছে অনেকটাই। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। তৃতীয়ত, দেশের নানা প্রান্তে অর্থাৎ বালুচিস্তান থেকে শুরু করে সিন্ধ হয়ে খাইবার পাখতুনখোয়া সর্বত্র অরাজকতা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ইরান থেকে শুরু করে আফগানিস্থান, ভারত প্রায় সমস্ত প্রতিবেশী দেশকেই নিজেদের শত্রু বানিয়েছে পাকিস্তান।

কিন্তু, এবার আপনাদের সামনে তুলে ধরবো এমন কিছু তথ্য যা শুনলে আপনারা চমকে যাবেন!

পাকিস্তানের এই পরিণতির জন্য আদতে দায়ী আমেরিকাই। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। কারণ লুকিয়ে রয়েছে সাম্প্রতিক ঘটনাতেই।

TLP অর্থাৎ তেহেরেক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান ইজরায়েলের বিরোধিতায় একটি মিছিল বের করে। অন্যদিকে, পাকিস্তানও ইজরায়েলকে নানা কারণে স্বীকৃতি দেয় না। তবে, দুজনেই যদি ইজরায়েল বিরোধী হয় তাহলে পাকিস্তান সরকার TLP-কে আটকাচ্ছে কেন? তবে কি আমেরিকার নেতৃত্বে পিঠ পিছে ইজরায়েলকে সমর্থন করছে পাকিস্তান? নাকি মিছিল আমেরিকার দুতাবাসের দিকে যাওয়ার জন্যই এই পরিণতি হল পাকিস্তানের? জানলে অবাক হবেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি যখন ইজরায়েল থেকে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তা পাকিস্তানে লাইভ টেলিকাস্ট করা হয়। যা আগে কখনও করা হয়নি। অর্থাৎ, ঘটনা প্রবাহ যা, তা থেকে বোঝা যায় যে ট্রাম্পের জন্য পাকিস্তান সব করতে রাজি।

এমনকি ট্রাম্প সম্প্রতি আফগানিস্থানের বাগরাম এয়ারবেস দখল করার দাবি তুলেছে। আবার পাকিস্তান জনসমক্ষে TTP-র সাথে আফগানিস্থানের যোগাযোগের কোনও প্রমাণ দিতে না পারলেও, আফগানিস্থানের ওপর হামলা করে পাকিস্তান? তবে কি সেক্ষেত্রেও রয়েছে মার্কিন মদত?

অন্যদিকে, সৌদি আরব কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের কাঁধে হাত রেখে যতই বলুক যে পাকিস্তানে হামলা মানে সৌদির ওপর হামলা – তার প্রতিফলন কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল না। কারণ পাকিস্তানের ওপর আফগানিস্থানের হামলার পর সৌদিকে শুধুমাত্র শান্তির বার্তা দেওয়া ছাড়া আর কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

আপনার কী মনে হয়? কী হবে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ? জানাতে ভুলবেন না আপনার মতামত

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join