প্রতি মাসে আয় ৩ হাজার! কেবিসিতে গিয়ে বড় জয় বাংলার ‘চা ওয়ালা’র, কত পেলেন মিন্টু?

Published on:

kbc mintu sarkar

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এই মুহূর্তে টেলিভিশনের জনপ্রিয় কুইজ শো গুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় শো হল ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ (Kaun Banega Crorepati)। যার সঞ্চালনায় বরাবর দায়িত্ব পালন করে আসছেন বলিউডের বিগ বি অমিতাভ বচ্চন। আর এই হট সিটে বসেই কেউ জিতেছেন ৫০ লক্ষ টাকা তো কেউ অন্য কোনও প্রাইজ মানি। স্বপ্নপূরণ হয়েছে সকলের। সম্প্রতি সেই অনুষ্ঠানের এক পর্বে দেখা গিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী এক চা বিক্রেতা সঠিক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ৭৫ লক্ষ টাকা জেতেন। কিন্তু এই আনন্দের মাঝেও তাঁর চোখের কোণায় জলের বিন্দু স্পষ্ট। হয়তো সেই চোখের জলই ছিল জীবনে দারিদ্রতা দূর করার আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।

বাংলার ছেলের লড়াই কৌন বনেগা ক্রোড়পতিতে

একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তুলে ধরা হয় মিন্টু সরকারের জীবনসংগ্রাম। যেখানে দেখা গিয়েছে মিন্টু এবং তার মা জীবনসংগ্রামের লড়াইয়ে যে আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল, তা দেখে চোখে জল চলে আসে সকলের। জানা যায়, নিজেদের কোনো কৃষি জমিও ছিল না। একটি এক একরের জমি থাকলেও, বাবার চিকিৎসার সময় সেটা বন্ধক রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। তাই তাঁর বাবার স্মৃতির উদ্দেশে সেই জমি ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। তাই রায়গঞ্জে চায়ের দোকান চালানো ছেলেটি স্বপ্ন পূরণের জন্য এই মঞ্চে এসেছে। ১ লাখ টাকা জিতলেই বাবার স্মৃতিতে ছাড়িয়ে আনবেন তিনি সেটিকে।

চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চালাতেন মিন্টু

মিন্টু জানান, বাবা সবসময় তাঁকে পড়াশোনায় মনযোগ দিতে বলত। কিন্তু বাবা অসুস্থ হওয়ার পর বাধ্য হয়েই তাঁকে পড়াশোনা ছাড়তে হয়। এবং সংসারের হাল ধরতে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়। এই বছরেই তাঁর বাবা মারা যান। দোকান থেকে প্রতি মাসে তাঁর ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার আয় হয়। উপরন্তু, তিনি তার রেশন দোকান থেকে সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে চাল, ডালের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পান। যা তাঁকে ও তাঁর মাকে সাহায্য করে সংসার চালিয়ে নিয়ে যেতে। ক্লাস টেনের পরীক্ষাও দিতে পারেননি।

গত বছর থেকেই কেবিসি-তে আসার চেষ্টা করছিলেন তিনি। অবশেষে তাঁর সেই সাধ পূরণ হয়েছে। এই পর্বে খেলার মাঝেই দেখা গিয়েছিল বিগ বি একটি সোনার মোহর উপহার দেন মিন্টুকে। তখন বাংলার এই কেবিসি প্রতিযোগী জানান, তাঁর পরিবারে শেষ সোনা কেনা হয়েছিল তার বোনের বিয়ের জন্য। তারপর আর সোনার মুখ দেখতে পারেননি তাঁরা। দর্শকদের মধ্যে বসে থাকা মায়ের হাতেই এই সোনার মুদ্রাটা তুলে দেয় সে। আর তাতেই চোখ বেয়ে বয়ে যায় অশ্রুধারা।

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে তিনি অবশেষে ৭৫ লক্ষ টাকা জেতেন এবং ১ কোটি টাকার জন্য খেলার চেষ্টাও করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ১ কোটি টাকার জন্য যে প্রশ্ন ছিল, তার উত্তর তিনি দিতে পারেননি। তাই শেষ পর্যন্ত কুইট করেন। আর ৭৫ লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়ি যান। তবে এই অর্থই যে মিন্টু এবং তাঁর পরিবারের দরিদ্রতা দূর করতে সক্ষম, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥