বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলাকে সামনে রেখে গত 7 মে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে একের পর এক মিসাইল হামলা চালায় ভারতীয় বায়ু সেনা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় 9টিরও বেশি পাক জঙ্গিঘাঁটি। মৃত্যু হয় শতাধিক সন্ত্রাসীর। মূলত লক্ষ্য স্থির রেখেই পাক সন্ত্রাসীদের বেছে বেছে নিকেশ করেছিল ভারত।
এদিকে পাকিস্তান আবার জঙ্গিদের হয়ে চোরের মতো ভারতের নিরীহ নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। যদিও সেই হামলার হিসেব ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে মিটিয়ে নেয় দিল্লি। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতেই আচমকা ঘোষিত হয় যুদ্ধবিরতি। তবে সংঘর্ষ থামলেও পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক কিন্তু তলিয়ে গিয়েছে ভারতের।
সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত থেকে শুরু করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সবেতেই দাড়ি টেনেছে দিল্লি। তাতে যদিও যায় যায় অবস্থা ইসলামাবাদের! তবে রিপোর্ট বলছে, ভারত-পাক সংঘাতের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া অমৃতসর ও ওয়াঘা (Attari – Wagah Border) সীমান্ত অঞ্চলের স্থানীয় অর্থনীতিও।
সংঘাতের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে অমৃতসর-ওয়াঘা অঞ্চলের অর্থনীতি
দিল্লির কড়া নিষেধাজ্ঞার পর অনেক আগেই আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি দুই বন্ধ হয়েছে। শিক্ষা পেয়েছে ইসলামাবাদ। তবে ভারত-পাক সংঘাতের জের, ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অমৃতসর ও ওয়াঘা সীমান্ত অঞ্চল গুলির অর্থনীতিও। প্রকাশ্যে আসা বেশ কিছু রিপোর্ট দাবি করছে, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের কারণে প্রায় 12 হাজার কোটির আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এই দুই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
জানা যাচ্ছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ফলে অমৃতসর ও ওয়াঘা সীমান্ত অঞ্চলের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বর্তমানে সরকারের সাহায্য চাইছেন। তাঁদের বক্তব্য, সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় তাদের আয় প্রায় শূন্যতে এসে থেকেছে। দুই অঞ্চলের বহু দোকান ও হোটেল মালিক দাবি করেছেন, দোকান চালানো যাচ্ছে না, তার ওপর মাসিক ঋণের বোঝা! সবমিলিয়ে এক প্রকার নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা অমৃতসর ও ওয়াঘা অঞ্চলের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
এ প্রসঙ্গে এক দোকান মালিক জানিয়েছেন, গত 20 দিন ধরে তাদের কোনও রোজগার নেই। দোকানের মাসিক ভাড়া 10 হাজার টাকা, যা অন্য সময় দিতে খুব একটা সমস্যা না হলেও বর্তমানে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁদের! এদিকে অমৃতসর শহরের হেরিটেজ স্ট্রিটে গত শনিবার প্রথমবারের মতো কিছু হোটেল বুকিং শুরু হলেও, তা ছিল মাত্র 20 শতাংশ।
জানা যাচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের কারণে বাণিজ্য বন্ধ থেকে শুরু করে সরকারের একাধিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরের দর্শনার্থী সংখ্যা প্রায় 70 শতাংশ কমে গিয়েছে। এছাড়াও শিরোমণি গুরুদ্বারা কমিটি পরিচালিত সরাইগুলিতে 80 শতাংশ পর্যন্ত বুকিং বাতিল হয়েছে। এমতবস্থায়, একপ্রকার সব শেষের পথে অমৃতসর ও ওয়াঘা দুই সীমান্ত অঞ্চলের ব্যবসা!
সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা
সদ্য প্রকাশিত বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অমৃতসর ও ওয়াঘা সীমান্ত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য দাবি করেছেন। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি ওই অঞ্চল গুলির ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছেন। যেখানে লেখা হয়েছে, যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, সরকার ততদিন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসিক অর্থ সাহায্য পাঠাক।
অবশ্যই পড়ুন: শুধু পঞ্চম নয়, DA মামলার প্রভাব পড়বে ষষ্ঠ বেতন কমিশনেও? বড় তথ্য ফাঁস
বলা বাহুল্য, সংঘর্ষের কারণে শুধু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের অর্থনীতি নয়, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ভাবমূর্তি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও বেশ খানিকটা প্রভাব পড়েছে। যা সামাল দিতে বর্তমানে কূটনৈতিক উদ্যোগ ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়া উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |