প্রীতি পোদ্দার, তিরুবনন্তপুরম: বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে শোনা যাচ্ছে কেরালায় আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য বরাদ্দ পেনশন (Pension) বেশ কিছু সরকারি কর্মীদের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। কী ভাবে এত দিন ধরে এই ঘটনা চলছিল, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আসলে যাঁদের জন্য পেনশন ধার্য করা হয়েছে, তাঁরা ঠিক মতো পেনশন পাচ্ছেন কি না তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছিল রাজ্য অর্থ দফতর। তখনই এই আর্থিক বেনিয়মের ঘটনাটি সম্মুখে উঠে আসে। আর তারপরই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পেনশনের টাকা ঢুকেছে ১৪৫৮ জনের ব্যাঙ্কে!
সূত্রের খবর, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের ৬২ লক্ষ মানুষকে এই সরকারি পেনশনের সুবিধা দিয়ে থাকে কেরালা সরকার। আর এই শ্রেণির মানুষের জন্য মাসে ১৬০০ টাকা পেনশন বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। কিন্তু সমীক্ষার ভিত্তিতে অর্থ দফতরের অডিট করার সময় দেখা গিয়েছে, পেনশনের সেই টাকা সরকারি কর্মীদের একাংশের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। যে সব সরকারি কর্মীদের অ্যাকাউন্টে পেনশনের ওই টাকা ঢুকেছে, তার সংখ্যা ১৪৫৮। যাঁদের অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা ঢুকেছে সেই তালিকায় সরকারি কলেজের অধ্যাপক, গেজেটেড অফিসারও রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হুলস্থুল পড়তেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী কেএন বালগোপাল তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন।
তালিকায় উঠেছে একাধিক কর্মচারীর নাম
জালিয়াতি করে পেনশন হাতিয়ে নেওয়া সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। প্রায় ৩৭৩ জন স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় রয়েছে এই কাণ্ডে। এছাড়াও জনশিক্ষা বিভাগ থেকে ২২৪ জন, চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ১২৪ জন, আয়ুর্বেদ বিভাগ থেকে ১১৪ জন, পশুপালন বিভাগ থেকে ৭৪ জন, গণপূর্ত বিভাগ থেকে ৪৭ জন, কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে ৪৬ জন, হোমিওপ্যাথি বিভাগ থেকে ৪১ জন, কৃষি বিভাগ থেকে ৩৫ জন। রাজস্ব বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং সামাজিক বিচার বিভাগের ৩৪ জন, বীমা স্বাস্থ্য পরিষেবার ৩১ জন এবং কলেজিয়েট শিক্ষা বিভাগের ২৭ জন কর্মচারী এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই হেন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, কোথায় গাফিলতি ছিল, তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী কে এন বালাগোপাল জানিয়েছেন, “বেআইনিভাবে নেওয়া পেনশনের পরিমাণ সুদের সঙ্গে আদায় করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যোগ্য ব্যক্তিরা যাতে তাদের পূর্ণ ও সঠিক পেনশন পান তা নিশ্চিত করা হবে।”