নয়া দিল্লিঃ লোকসভা ভোটের গণনার মাঝেই মুখে হাসি ফুটল বহু সরকারি কর্মচারীর। কেউ হয়তো ভাবতেও পারেননি যে এমন রায় দেবে হাইকোর্ট। এক কথায় টানা ১৬ বছর পর হাইকোর্টের রায়ে স্বস্তিতে হাজার হাজার সরকারি কর্মী। মাথার ওপর নিজস্ব ছাদ কে না চায়। আপনিও চান নিশ্চয়ই। কিন্তু এই মাথার ছাদ টিকিয়ে রাখতে গিয়ে যদি হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাহলে তা মোটেও কারোর পক্ষেই বিষয়টা সুখকর হবে না। তবে এবার এই বিষয়ে আদালতের রায়ে সকলের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
বড় রায় হাইকোর্টের
জানা গিয়েছে, টানা ১৬ বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার চণ্ডীগড় প্রশাসনের ৩,৯৩০ জন কর্মচারী পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট থেকে স্বস্তি পেলেন। বছরের পর বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ে ১০০ জন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০৮ সালে চণ্ডীগড় প্রশাসনের তরফে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের আবাসাওন দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্পের আয়োজন করেছিল, ‘স্ব-অর্থায়ন কর্মচারী আবাসন প্রকল্প।’ র আওতায় একটি লাকি ড্র-এর ব্যবস্থাও করা হয়। সেখানে অংশ নিয়েছিলেন ৭,৯১১ জন। তবে সেই সময়ে মাত্র ৩৯৩০ জন মানুষি ফ্ল্যাট পাওয়ার ক্ষেত্রে সিলেক্ট হয়েছিলেন। অন্যদিকে এই ফ্ল্যাট পেতে CHB তে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা জমা দিয়েছিল। এদিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও জমি হস্তান্তর করতে পারে না প্রশাসন। এরই মধ্যে প্রতিটি আবাসন ইউনিটের খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর এই নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হন সরকারি কর্মীরা।
বড় রায় আদালতের
চলতি বছরের গোড়ার দিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি হলফনামা আকারে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দাখিল করে জানিয়েছিল যে এই প্রকল্পটি সম্ভব নয় এবং এটি বন্ধ করা উচিত। চণ্ডীগড় প্রশাসনের হলফনামায় বলা হয়, “চণ্ডীগড় প্রশাসন ইউটি এমপ্লয়িজ সেলফ্যান্সিং হাউজিং স্কিম, ২০০৮ নিয়ে এগিয়ে না যাওয়ার এবং ফলস্বরূপ আবেদনকারী এবং অন্যান্য আবেদনকারীদের জমা দেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে এই আদালতকে অবহিত করার জন্য হলফনামার মাধ্যমে বর্তমান স্থিতি রিপোর্ট দাখিল করা হচ্ছে।” ২০১৯ সালে কর্মচারীদের দায়ের করা আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট চণ্ডীগড় প্রশাসনকে আবাসন প্রকল্পের স্ট্যাটার রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। আবেদনকারীদের দাবি, ২০০৮ সালে যে হারে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেই একই দামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করতে হবে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনকে ইউটি এমপ্লয়িজ হাউজিং স্কিম (সেলফ ফিনান্স) এর অধীনে ৩৯৩০টি ফ্ল্যাটের জমির দাম কর্মচারীদের কাছ থেকে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বিচারপতি ললিত বাত্রা এবং বিচারপতি সুরেশ্বর ঠাকুরের বেঞ্চ জানিয়েছে, জমির বর্ধিত মূল্য কর্মচারীদের কাছ থেকে নেওয়া যাবে না, যদিও বর্তমানে ব্যয় অনুযায়ী ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যয় কর্মচারীদের দিতে হবে। এই নির্দেশের ফলে কর্মীরা বর্তমান মূল্যের চেয়ে প্রায় দশগুণ কম দামে জমি পাবেন। তবে বিস্তারিত অর্ডার এখনও আসেনি। এই মামলায় ফুল কুমার সাইনি ২০১৩ সালে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন এবং হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন যে ২০০৮ সালে চণ্ডীগড় প্রশাসনের ৩৯৩০ জন সরকারি কর্মচারীর জন্য ইউটি এমপ্লয়িজ হাউজিং স্কিম (সেলফ ফিনান্স) প্রস্তুত করা হয়েছিল। এ জন্য ২০১০ সালে কর্মীদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ড্র অনুষ্ঠিত হয়।