Indiahood-nabobarsho

সুড়ঙ্গের মধ্যে ১১৯ কিমি চলবে ট্রেন, পার করবে ৯২৭ সেতু, ৩৬ টানেল! ইতিহাস গড়বে রেল

Published on:

Katra-Srinagar Railway Track Indian Railways

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একবার কল্পনা করুন তো, আপনাকে ২৭২ কিলোমিটার পথ ট্রেনে পাড়ি জমাতে হবে, তাও কখনো পাহাড়ি ঢাল, কখনো আবার গভীর খাঁদের মধ্য দিয়ে। আর এই দীর্ঘ পথের ১১৯ কিলোমিটার চলবে শুধু টানেলের মধ্য দিয়ে। শুধু তাই নয়, ছোট-বড় মিলিয়ে ৯২৭টি সেতু পেরোতে হবে এই ট্রেনটিকে (Indian Railways)। পাশাপাশি জানলা দিয়ে তাকালেই চোখে পড়বে বরফে ঢাকা পাহাড়। কি কল্পনার জগতে চলে গিয়েছিলেন নিশ্চয়? কিন্তু কল্পনা নয়, এটাই বাস্তব।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

এখন অনেকেই হয়তো ভাবছেন যে, এই দীর্ঘ পথ যাত্রা করতে কমপক্ষে ৬-৭ ঘন্টা সময় লাগবে। কিন্তু না, এই অসাধারণ যাত্রা আপনি মাত্র ৩ ঘন্টায় শেষ করতে পারবেন। না, এটা কোন সিনেমার দৃশ্য নয়। এটি বাস্তব। ভারতীয় রেল দীর্ঘ ২৮ বছর পর এবার স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পথে হেঁটেছে, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। অবশেষে সব বাধা পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৯শে এপ্রিল এই রেলপথের শুভ সূচনা করবেন।

কোথা থেকে কোথায় চলবে এই ট্রেন?

সুত্রের খবত, এই নয়া নির্মিত এই রেলপথে ‘বন্ধ ভারত সেমি হাই-স্পিড ট্রেন’ চালানো হবে, যা চলবে জন্মুর শ্রীমাতা বৈষ্ণব দেবী কাটরা স্টেশন থেকে কাশ্মীরের শ্রীনগর পর্যন্ত। এতদিন পর্যন্ত জন্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার সরাসরি কোন রেলপথ ছিল না। গাড়িতে যেতে সময় লাগতো প্রায় ৭ ঘন্টার বেশি। তুষারপাত হলে তো রাস্তা বিপজ্জনক হয়ে পড়তো। ট্রাফিক জ্যামে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকতে হতো। আর এই নতুন রেলপথ হবে খুবই নিরাপদ, বাঁচবে সময় এবং যাতায়াত হবে খুবই মসৃণ।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

এই রেলপথের বিশেষত্বগুলি কি হবে?

উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্প হতে চলেছে ভারতীয় রেলের এক ঐতিহাসিক মোড়। এখনো পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, এই যাত্রাপথে মোট ৩৬টি টানেল থাকবে, যার মোট দৈর্ঘ্য হবে ১১৯ কিলোমিটার। ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৯২৭টি সেতু থাকবে, যার মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চ রেল সেতুটিও থাকবে। এমনকি ট্র্যাকের ৪০% অংশই টানেলের মধ্য দিয়ে চলবে।

এও শোনা যাচ্ছে, দুর্দান্ত প্রকৌশল দক্ষতা দিয়ে তৈরি হবে চেনাব নদীর উপর সেতু, যার উচ্চতা হবে ৩৫৯ মিটার, যা আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার বেশি। সুত্রের খবর, এখানে প্রথমবারের মতো নির্মিত হচ্ছে ভারতের প্রথম কেবল-স্টেড রেল সেতু, তাও অঞ্জি নদীর উপরে। আর এই প্রকল্পে ব্যবহার হয়েছে মোট ৩০ হাজার টন স্টিল এবং সেগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ঝুলছে ৪২৩ জন শিক্ষকের ভাগ্য! পুরনো কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে বাড়ছে অনিশ্চয়তা

গুরুত্বপূর্ণ কিছু টানেল

এখনো পর্যন্ত ৩৬টি টানেলের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টানেল আলোচনায় উঠে এসেছে। সেগুলি হল-

টানেল T-50: এটি ভারতের দীর্ঘ ট্রান্সপোর্ট টানেল, যার দৈর্ঘ্য হবে ১২.৭৭ কিলোমিটার। এটি সাম্বার ও খাড়ি অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত।

টানেল T-80: এটি দ্বিতীয় দীর্ঘ টানেল, যার দৈর্ঘ্য হবে ১১.২ কিলোমিটার। বানিহাল ও কাজিগুন্ড অঞ্চলের মধ্য দিয়ে পির পাঞ্জাল পর্বতশ্রেণী পেরিয়ে বরফের মোড়া পাহাড়ের ভিতর দিয়ে যাবে এই টানেলটি।

টানেল T-34: এই টানেলটির দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটারেরও বেশি। পাই খাড় ও অঞ্জি খাড় অঞ্চলের মধ্যের এই টানেলটি অঞ্জি খাড় সেতুর সঙ্গে সংযোগ করবে।

টানেল T-33: এই টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩.২ কিলোমিটার। এটি নির্মিত হয়েছে ত্রিকুট পাহাড়ে। টানেলটি নির্মাণে বিশেষ পরিশ্রম করতে হয়েছে প্রকৌশলীদের।

ভারতীয় রেলের এই প্রকল্প শুধুমাত্র পরিবহন ব্যবস্থায় নয়, বরং ইতিহাসেরও এক সাক্ষী। এই রেলপথের মাধ্যমে কাশ্মীর যাত্রা হবে আরো মসৃণ। পাশাপাশি দেশের বাকি অংশের মধ্যে সংযোগও আরও সুদৃঢ় হবে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group