প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পহেলগাঁও কাণ্ডের পর প্রশাসন ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে বেশ কড়া মনোভাব প্রকাশ করেছে। আসলে কাশ্মীরে এই জঙ্গি হামলার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে নাগরিকত্ব (Indian Citizenship)। কারণ অনেকেই দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করছে। এবং হামলার ছক বানাচ্ছে। তাই সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে নয়া মাপকাঠি বেঁধে দিল সরকার। আধার, প্যান ও রেশন কার্ড দেখালেই এখন আর ভারতের নাগরিক গণ্য হবেন না কেউ।
নাগরিকত্বের প্রমাণ দেবে এই দুই তথ্য
শুধু পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশ থেকে প্রচুর মানুষ দিল্লিতে এসে ভিড় বাড়াচ্ছে বলে রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে। এমনকি জাল নথি দিয়ে ভুয়ো আধার কার্ড, রেশন কার্ড বানিয়ে ভারতের নাগরিক হিসেবেই সেখানে তাঁরা বসবাস করছেন। তাই সেই আবহেই দিল্লি পুলিশের তরফে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে নয়া মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া হল। এখন থেকে মূল দু’টি নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরা হবে বলে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে একটি হল ভোটার আইডি কার্ড এবং অপরটি হল পাসপোর্ট।
ভারতে নাগরিকদের একাধিক পরিচয়পত্র রয়েছে, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড। আধার যদিও পরিচয়পত্র, কিন্তু তা নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয়। প্যানকার্ড কর সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়, রেশন কার্ড ব্যবহৃত হয় জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে। এর কোনওটিই নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয়। তাই জন্মের শংসাপত্র এবং ডমিসাইল সার্টিফিকেট, স্থায়ী নিবাসের শংসাপত্রই নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরে কেন্দ্র। তবে এবার দিল্লি পুলিশ নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে এই দুই তথ্যকেই তুলে ধরেছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, “ বিগত বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে বেআইনিভাবে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে আধার, প্যান এবং রেশন কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করছেন তাঁরা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এঁদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি। যার ফলে নানা বেআইনি কাজ চলছে দেশ জুড়ে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ ওয়াকফ নিয়ে নয়া মামলা নয়! জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
অন্যদিকে দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মোদি সরকারের এই নয়া নির্দেশিকার পর সব জেলার ডিসিপিদের তাঁদের এলাকায় ‘সন্দেহজনক’ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই নির্দেশের পর পরই, দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত বেআইনিভাবে বসবাসকারী প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন পাকিস্তানি নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৫২০ জন মুসলিম। এবং তাঁদের মধ্যে থেকে আবার ৪০০ জন আটারি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।