প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নেপালের পর এবার লাদাখ। গত বুধবার থেকে লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা এবং পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে লেহ শহরে মহাবিক্ষোভে নেমেছে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী। উত্তেজনা এমন ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিক্ষোভ চলাকালীনই লেহ-তে বিজেপির পার্টি অফিস সহ পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এমতাবস্থায় এই ঘটনার পিছনে সোনম ওয়াংচুকের (Sonam Wangchuk) উস্কানি মূলক বার্তাকে ‘অন্যতম কারণ’ বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার জেরেই আজ রিয়েল লাইফের ‘র্যাঞ্চো’-কে গ্রেফতার করল পুলিশ।
গ্রেপ্তার সোনম ওয়াংচুক
গত মাসেই সোনম ওয়াংচুকের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অলটারনেটিভ লার্নিং (এইচআইএএল)-এর ৪০ বছরের জমির লিজ বাতিল করে লাদাখ প্রশাসন। এবার সোনমের আর এক প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ (সেকমোল)-এর বিদেশি তহবিল গ্রহণ করার অনুমোদন বাতিল করে সংস্থার দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হল সিবিআইকে। সোনমের বিদেশি অনুদানের হিসাব এবং তাঁর বিদেশ সফরের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। এমতাবস্থায় অশান্তিতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল ইঞ্জিনিয়র, গবেষক তথা সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু!
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অভিযোগ, ২৪ সেপ্টেম্বর সোনম তাঁর বক্তৃতায় বেশ কিছু উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর বক্তৃতায় ‘আরব বসন্ত’ এবং নেপালের জেন জ়ি আন্দোলনের কথা উঠে এসেছিল। সেই সব বক্তব্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালায়। সরকারি অফিস, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাও সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের তরফে এই ঘটনার জন্য সোনমকে আগেই দায়ী করা হয়েছিল। এবার সরাসরি গ্রেফতারি করা হল। পিটিআই এর রিপোর্ট অনুযায়ী লাদাখ পুলিশের ডিজি এসডি সিংহ জামওয়ালের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী দুপুর আড়াইটায় ওয়াংচুককে তাঁর লেহর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু হয়েছে
আরও পড়ুন: সোনার বাংলা গড়তে মা দুর্গার কাছে সুযোগ চাইলেন অমিত শাহ
প্রসঙ্গত, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের জন্য অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুক-সহ ‘লেহ অ্যাপেক্স বডি’-র কয়েক জন সদস্য। এমনকি লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সোনমও দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন। অনশনও শুরু করেছিলেন তিনি। চলতি সপ্তাহেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদের। তার আগেই অশান্তির ঘটনায় কেন্দ্রের তরফে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলা হল সোনমের দিকে। এমনকি এই ঘটনায় কংগ্রেসের হাত রয়েছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি।