কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড পুরোপুরি বাতিল? ঘোষণা নিয়ে দ্বিধায় গোটা ভারত

Published on:

Nimisha Priya

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিরাট স্বস্তির খবর পেল গোটা দেশ। হ্যাঁ, কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়া (Nimisha Priya), যার উপর মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া ঝুলে ছিল এতদিন, সেই রায় এবার ইয়েমেন সরকার সম্পূর্ণভাবে বাতিল করেছে। দীর্ঘ 7 বছর ধরে চলা আইনি লড়াই, পারিবারিক হতাশা, সব প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ এবার বিরাট স্বস্তি পেল নিমিশা প্রিয়া এবং তার পরিবার।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

কীভাবে বেঁচে ফিরলেন নিমিশা প্রিয়া?

সম্প্রতি গ্র্যান্ড মুফতি কাঁথাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ারের অফিস থেকে দেওয়া একটি বিবৃতি অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, নিমিশার মৃত্যুদণ্ড এখন স্থগিত নয়। সম্পূর্ণভাবেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ইয়েমেন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো লিখিত স্বীকৃতি মেলেনি। এমনটাই জানানো হয়েছে।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

ঘটনাটি কী?

উল্লেখ্য, 2008 সালে কেরালার পাল্লাকাদ জেলার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া ইয়েমেনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। নার্স হিসেবেই কাজ করতে গিয়েছিলেন সেখানে। তবে সেখানে তার সঙ্গে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী তালাল আবদো মেহেদির পরিচয় হয়। এরপর একসঙ্গে তারা একটি ক্লিনিকও খোলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। 

সূত্র মারফৎ জানা যায়, মেহেদি তাঁকে নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করে। এমনকি নিমিশার পাসপোর্ট পর্যন্ত কেড়ে নেয়, আর নিজেকে প্রকাশ্যে তার স্বামী বলেই দাবি করত সে। এরপর 2017 সালে পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার জন্য নিমিশা এক বিরাট ফাঁদ আঁটেন। আর তাঁর সেই পরিকল্পনার পরিণাম হয় মর্মান্তিক।

হ্যাঁ, ড্রাগের অতিরিক্ত মাত্রায় মারা যান মেহেদি। আর এরপরেই ইয়েমেন পুলিশ নিমিশাকে গ্রেফতার করে ফেলে। 2018 সালে তাকে হত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং 2020 সালে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। আর এরপরেই আইনি জটিলতার মধ্য দিয়ে ঝুলতে থাকে তার এই সাজা।

ভারত সরকারের চেষ্টায় প্রাণ রক্ষা

তবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরেই নড়েচড়ে বসে ভারত সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রক, কেরল সরকার এবং মানবাধিকার সংগঠন একসঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করতে শুরু করে। নিমিশার পরিবার ইয়েমেনের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে আপিলও করেছিল এবং ভারত সরকার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এই মামলায় হস্তক্ষেপ শুরু করে।

আরও পড়ুনঃ ফের বাড়ল সোনার দাম, রুপো নিয়েও খারাপ খবর! আজকের রেট

এরপর 2025 সালের 16 জুলাই নিমিশার ফাঁসির দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করায় সেই ফাঁসি স্থগিত হয়। এরপর সম্পূর্ণ ভাবে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে দেওয়া হয়, যা নিঃসন্দেহে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এবং তাঁর পরিবারের জন্য কূটনৈতিক সাফল্য। যদিও নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড যে পুরোপুরি স্থগিত হয়েছে, তা নিয়ে ইয়েমেনের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। গ্র্যান্ড মুফতির অফিস ঘোষণা করলেও, নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত নিয়ে ধ্বন্দে গোটা দেশ।

গ্র্যান্ড মুফতির অফিসার জানিয়েছে যে, দেশজুড়ে চলা জনমত, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের সক্রিয়তা, আর রাজনৈতিক স্তরের আলোচনার মাধ্যমেই মৃত্যুদন্ডের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে নিমিশা প্রিয়া। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রকম বিবৃতি মেলেনি, তবে তাঁর পরিবার ও দেশবাসীর জন্য এটি স্বস্তির খবর, তা বলা চলে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
Join Group