বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতীয়দের জন্য বিদেশ যাত্রা আরও কঠিন হতে চলেছে! ভিন দেশ মূলত আমেরিকায় গিয়ে পড়াশোনা কিংবা চাকরির স্বপ্ন দেখেন না এমন ভারতীয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ার আগে প্রয়োজন পাসপোর্ট ও ভিসার। সূত্র বলছে, পড়াশোনা সূত্রে হোক কিংবা কর্মসূত্রে আমেরিকায় যেতে হলে H-1B ভিসা স্বদেশীদের প্রথম পছন্দ।
তবে এই ভিসা তৈরিতে খরচ পড়ে যায়, লক্ষাধিক টাকা। যা ভারতের মধ্যবিত্তদের পক্ষে জোগাড় করাটা সব সময় সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায়, H-1B ভিসা নিয়ে বড় খবর সামনে এসেছে। বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের পৃষ্ঠায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ছাড়া করার পর এবার H-1B ভিসার দাম বাড়াতে পারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার।
বাড়ছে H-1B ভিসা তৈরির খরচ?
বেশ কয়েকটি সূত্র মারফত খবর, নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আমেরিকায় যেতে চাইলে H-1B ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় ভারতীয় নাগরিকদের। সেক্ষেত্রে, ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকে আমেরিকায় পৌঁছানো পর্যন্ত দীর্ঘ খরচ বহন করতে হয় ভারতীয়দের। তবে বেশ কিছু রিপোর্ট মারফত খবর এবার পূর্বনির্ধারিত খরচ থেকে অনেকটাই বাড়ছে H-1B ভিসা তৈরির ব্যয়।
অঙ্কের হিসেব বলেছে, কর্মসূত্রে হোক কিংবা ব্যক্তিগত কোনও কাজে H-1B ভিসার আবেদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ পর্যন্ত দেশের দেশের নাগরিকদের 6.1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে যাবে। হিসেবটা খোলসা করে বললে, H-1B ভিসার জন্য আবেদনের খরচ 1,67,830 টাকা (২০১০ মার্কিন ডলার) থেকে 6,13,140 টাকা (৭৩৮০ মার্কিন ডলার) পর্যন্ত হতে পারে। বলে রাখা ভাল, আমেরিকায় যাওয়ার জন্য এই এই ভিসা পেতে আবেদন করার পর আবেদন মূল্য হিসেবে 38,230 টাকা পেমেন্ট করতে হয় গ্রাহকদের। সূত্র বলছে, এটিই ভিসা আবেদনের প্রাথমিক ফি।
মার্চেই শুরু হবে নিবন্ধন
কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করার পরও এই ভিসা পেতে হলে লটারির জন্য অপেক্ষা করতে হয় আবেদনকারীদের। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই চলতি বছরের সেই লটারির দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, সেশেলসের কারণে 2022 সালের অক্টোবর থেকে সেপ্টেম্বর, 2023 সাল পর্যন্ত ভারতীয়দের জন্য 72 শতাংশ ভিসা সুরক্ষিত ছিল। এবার সেই প্রক্রিয়া লটারির মাধ্যমে পুনরায় শুরু হবে চলতি বছরের 7 মার্চ। হ্যাঁ, মার্চ মাসের 7 তারিখ থেকে ভিসার লটারি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে তা চলবে আগামী 24 মার্চ পর্যন্ত।
H-1B ভিসার বৈধতা কতদিন?
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের 7 মার্চ থেকে শুরু হওয়া লটারির নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলাকালীন যে সকল ভারতীয় যাত্রীরা ভিসার জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করবেন তাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা হাতে পাওয়ার পর তার বৈধতা থাকবে 3 বছর। অর্থাৎ, 2025 সালের 1 অক্টোবর থেকে শুরু করে আগামী 3 বছরের জন্য H-1B ভিসা গুলি বৈধ থাকবে। এক কথায়, কর্মসূত্রে যদি কোনও ভারতীয় আমেরিকায় যাওয়ার কথা ভাবেন সেক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদের ওপর ভিত্তি করে তিনি আগামী 3 বছর আমেরিকায় বসবাস করতে পারবেন। তবে প্রকাশ্যে আসে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট বলছে, H-1B ভিসার মেয়াদ আমেরিকায় থাকাকালীন 6 বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়।
আমেরিকায় পৌঁছেও গুনতে হয় মোটা অঙ্ক!
বেশ কিছু জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারত থেকে H-1B নিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার পর যদি কোনও ভারতীয় সেখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকার কথা ভাবেন। সেক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে I-140 ফর্ম পূরণ করে সে দেশে নিজের বসবাসের মেয়াদ বাড়াতে পারেন। তবে তাতেও যথেষ্ট খরচ রয়েছে। হিসেব বলছে, H-1B ভিসার আবেদন ফি ছাড়াও জালিয়াতি-বিরোধী ফি হিসেবে 41, 500 টাকা দিতে হয় ভারতীয় নাগরিকদের।
আরও পড়ুনঃ ভারতের বিরুদ্ধে কোনও প্ল্যানই করছে না কাজ! ট্রাম্প ফেরায় ল্যাজেগোবরে পাকিস্তান
এগুলি ছাড়াও কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে আমেরিকায় গেলে সেখানে 25 জনের কম কর্মী নিয়োগকারীদের ন্যূনতম 62 হাজার টাকারও বেশি ফি দিতে হয়। তবে সংখ্যাটা যদি বেশি হয় সে ক্ষেত্রে খরচ আরও বাড়ে। এক কথায় বলতে গেলে, ভারত থেকে কাঠখড় পুড়িয়ে কারি কারি অর্থ খরচ করে পকেটের যন্ত্রণা নিয়ে আমেরিকায় পৌঁছানোর পর সেখানে গিয়েও নিস্তার পান না ভারতীয়রা। আর এই পরিস্থিতির পরও অবৈধ অভিবাসী নির্মূল করতে এবার ভারতীয়দের জন্য H-1B ভিসার খরচ বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারেন আমেরিকার নব নিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |