বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: 2020 সালটা ছিল বিশ্ববাসীর কাছে অভিশাপের। আচমকা মানব জীবনে হানা দিয়েছিল করোনা মহামারী। যার প্রচন্ড আঘাতে প্রাণ যায় অগণিত মানুষের। তবে শুধু মৃত্যুই নয়, করোনাকালে লকডাউন পর্ব চলাকালীন বন্ধ হয়েছে বহু ব্যবসা! আজও করোনার সেই প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে পারেননি বহু ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী। করোনার কারণে কর্মসংস্থান থেকে ছাঁটাই হয়েছেন বহু মানুষ। শুধু প্রাণ নিয়েই থেমে থাকেনি করোনা, পেটে লাথি মেরেছে বহু দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের।
আর এসবের মাঝেই নিজের পুরনো জৌলুস হারিয়েছে ভারতীয় রেলের (Indian Railways) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। অনেকেই হয়তো জানেন না, করোনা মহামারীর কারণে বর্তমানে ভারতের একটি স্টেশন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হ্যাঁ, টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে প্ল্যাটফর্ম সব অক্ষত থাকা সত্ত্বেও ওই স্টেশনে দাঁড়ায় না কোনও ট্রেন। ভরদুপুরেও খা খা করে ভারতীয় রেলের ওই স্টেশনটি।
করোনার কারণে এই স্টেশন আজ পরিত্যক্ত
অনেকেই হয়তো জানেন না, মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া থেকে অনতি দূরে কোহদার স্টেশনটি করোনার কারণে আজ পরিত্যক্ত। একটা সময় এই স্টেশন দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতেন শয়ে শয়ে মানুষ। নিয়ম মতো স্টেশনে এসে দাঁড়াত ট্রেনও। তবে 2020 সালে লকডাউন ঘোষণা করা হলে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এই স্টেশন। পরবর্তীতে তা আর চালু করা সম্ভব হয়নি।
বিরাট ভূমিকা ছিল এই স্টেশনের
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মধ্যপ্রদেশের এই কোহদার স্টেশনটি এক সময়ে তৃষ্ণা মেটাতো ভারতীয় রেলের। খোলসা করে বলতে গেলে, 1960-61 সালের জল সঙ্কটের সময় এই স্টেশনের কাছে অবস্থিত নদী থেকে জল তুলে ট্রেনে করে অন্য স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হতো। পরবর্তীতে ওই জল দিয়েই যাত্রীদের তৃষ্ণা নিবারণ করতো রেল। জানিয়ে রাখি, স্টেশনের কাছে অবস্থিত ওই নদীর ওপর একটি রেল সেতুও রয়েছে। তবে সব কিছুর মাঝেই আজ জলশূন্য কোহদার স্টেশন।
কেন পুনরায় চালু করা গেল না কোহদার স্টেশন?
বিগত 5 বছর ধরে বন্ধ রয়েছে মধ্যপ্রদেশের এই কোহদার স্টেশন। কিন্তু কেন আবার নতুন করে চালু করা গেল না এই স্টেশন? প্রথমেই বলি, করোনা মহামারী কালে এই স্টেশনে কাটনি-ভুসাবলগামী ট্রেন থামতো। তাছাড়াও আরও বেশ কিছু ট্রেনের স্টপেজ ছিল এই স্টেশনে। স্থানীয় কৃষকরা এই স্টেশনেই সবজি বিক্রি করতেন, তাছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মজীবী মানুষ এই স্টেশন দিয়েই প্রতিদিন অফিসে যেতেন। তবে করোনার কোপে এই স্টেশনের স্টপেজ বন্ধ করে দেয় রেল। যার কারণে ধীরে ধীরে যাত্রী শূন্য হতে থাকে স্টেশনটি।
অবশ্যই পড়ুন: বেজায় অসম্মান! ইংল্যান্ডে ভারতীয় দল থেকে বাদ বড় তারকা! এন্ট্রি নেবেন এই তরুণ
ফলত, দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর বর্তমানে সৌন্দর্যহীনতা ও জলশূন্যতায় ভুগছে এই স্টেশন। এই স্টেশনের একটি ভবন এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। বলা বাহুল্য, কোহদার স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গ্রামবাসীরাও। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, কেন পুনরায় চালু করা গেল না এই স্টেশন? এ প্রসঙ্গে রেলের যুক্তি ছিল, যাত্রী সংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ায় ও বিগত দিনগুলিতে রেলের লোকসানের কারণে এই স্টেশনটিকে আর পুনরায় চালু করা যায়নি। তাছাড়াও ওপর মহলের চাপে স্টেশনটি থেকে স্টপেজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।