কলকাতাঃ বর্তমান সময়ে একটি বিষয় নিয়ে মানুষ আলোচনা করছেন, আর সেটা হল ধনকুবের ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ে। সেইসঙ্গে অনন্ত ও রাধিকার বেশভূষা নিয়েও মানুষের আলোচনার শেষ নেই। অনন্ত ও রাধিকার বিয়ে এই বছরের অন্যতম আলোচ্য বিয়ে হয়ে উঠেছে। যাইহোক, এসবের মাঝেও একজনকে নিয়ে সবর্ত্র ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আর তিনি হলেন বিখ্যাত বাঙালি শিল্পী জয়শ্রী বর্মণ। আম্বানিদের বিয়েতে তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে? জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
রাধিকার নজরকাড়া লেহেঙ্গা
সম্প্রতি গাঁটছড়া বেঁধেছেন রাধিকা মার্চেন্ট ও অনন্ত আম্বানি। কিন্তু এই বিয়েতে কনে রাধিকার লেহেঙ্গা ও লুক ছিল দেখার মতো। বিয়ের নানা অনুষ্ঠানে রাধিকাকে একাধিক লেহেঙ্গা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সকলের নজর যেন আটকে গিয়েছিল একটি সুন্দর গোলাপি লেহেঙ্গার ওপর। আর এই লেহেঙ্গার অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এর কাজ। সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম কাজ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। সুন্দর লেহেঙ্গায় তৈরি চিত্রকর্ম দেখে সকলের চোখ রীতিমতো কপালে উঠেছিল। আর এই লেহেঙ্গার কারিগর হলেন বাঙালি শিল্পী জয়শ্রী বর্মণ। এই লেহেঙ্গা তৈরির গল্প শুনিয়েছেন তিনি। আপনিও এই লেহেঙ্গার নেপথ্যের কাহিনী শুনলে চমকে উঠবেন।
কী বলছেন শিল্পী জয়শ্রী বর্মণ
ঘাগরা নকশা করেছেন বিখ্যাত সেলিব্রিটি আবু জানি সন্দীপ খোসলা এবং লেহেঙ্গার ওপর চিত্রকর্মটি করেছেন প্রখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী জয়শ্রী বর্মণ। তিনি নাকি প্রতিদিন ১৬-১৬ ঘণ্টা বসে ছবি আঁকতেন। শুধু ঘাগরা নয়, ব্লাউজ ও পুলওভারেও ছিল চিত্রকর্মের দারুণ দৃশ্য। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়শ্রী বর্মন বলেন, “টানা এক মাস ধরে একপ্রকার ধ্যানরত সন্ন্যাসীর মতো দিনরাত এই লেহেঙ্গা আঁকতে দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তাই এটা ছিল আমার জন্য এক ধরনের ধ্যান। ইটালিয়ান ক্যানভাসে এঁকেছি। মোট ১২টা প্লেট তৈরি করেছি হাতে এঁকে এঁকে। তার পরে সেলাই করা হয়েছে।”
শিল্পী জানান, ‘পারিশ্রমিক তো সকলেই দেন, কিন্তু সম্মান সবাই দিতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে যোগ্য সম্মান পেয়েছে আমার কাজ। প্রথমে এই লেহঙ্গাটা বিয়েতে পরার কথা হয়েছিল। কিন্তু পরে ঠিক হয়, পরের দিন যখন সকলে আশীর্বাদ করবেন, তখন রাধিকা পরবেন এই লেহঙ্গা।’
কেমন ছিল রাধিকার প্রতিক্রিয়া
লেহেঙ্গা প্রসঙ্গে রাধিকার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? এই বিষয়ে শিল্পী জয়শ্রী বর্মণ জানান, লেহেঙ্গা রেডি হয়ে যাওয়ার পর রাধিকা সেটা দেখে খুব খুশি হন। “ওহ মাই গড, আই কান্ট বিলিভ ইট,” বলে সে তার মুখে হাত রাখে। জয়শ্রী বলেন, “আমি কখনই তার প্রতিক্রিয়া ভুলব না।” যদিও এই লেহেঙ্গা তৈরির আগে একটি ভিডিও সেশন হয়। যেখানে ছিলেন বিয়ের মাসখানেক আগে রাধিকার স্টাইলিস্ট রিয়া কপূর প্রথমে যোগাযোগ করেন জয়শ্রীর সঙ্গে। তার পরে ঠিক হয় একটি ভিডিয়ো বৈঠকের দিন। রিয়া কাপুর, জয়শ্রী বর্মণ, রাধিকা মার্চেন্ট আবু জানি ও সন্দীপ খোসলা। জয়শ্রী জানান, ‘আমাকে জয়শ্রী আন্টি বলে ডাকেন রাধিকা। নিজেই বলেন, আপনার কাজ আমাদের জামনগরের বাড়িতে আছে। দেখেছি।’
আরও পড়ুনঃ রেশন নিয়মে আমূল বদল, এবার আরও কড়া হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার! সমস্যা হবে আপনার?
জয়শ্রী জানান, ‘রাধিকা কী চাইছেন, তা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। তবে শুধু তা নয়, আমি অম্বানীদের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই কিছুটা পরিচিত। কোকিলাবেন ও নীতা আগে আমার কাজ কিনেছেন। যা রাধিকা দেখেছেন জামনগরের বাড়িতে। ফলে ভিতরের গল্পও কিছুটা জানা ছিল। তাই কাজ করতে খানিকটা সুবিধা হয়েছে।’