প্রীতি পোদ্দার, গুয়াহাটি: বাংলাদেশে চলছে তুমুল অশান্তি।সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রত্যেকটা দিন কাটাতে হচ্ছে চরম আতঙ্ক নিয়ে। চারিদিকে মৌলবাদীদের তাণ্ডব, মিছিল এবং সভা। হিন্দুদের ঘর বাড়ি এবং মন্দিরগুলিও ছাড় পায়নি এই বিক্ষোভের ছোবল থেকে। আর এই আবহে অনেকেই চুপিসারে সীমান্ত অতিক্রম করে চলে আসছে ভারতে। গত আগস্ট মাসে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দুই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিলেন। ধৃতরা ছিলেন বাংলাদেশের মডেলগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা মাসুম খান ও ঢাকার বাসিন্দা সোনিয়া আক্তার। এবার তাই একের পর এক অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। আনা হচ্ছে NRC ব্যবস্থা।
কী বলছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী?
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, “সম্প্রতি অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। আর এই আবহে অজস্র অনুপ্রবেশকারী প্রবেশের চেষ্টা করেছে গত দুই মাসে। বহু অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে অসম পুলিশ, ত্রিপুরা পুলিশ ও বিএসএফ। সেই কারণেই বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ আমাদের কাছে উদ্বেগের। তাই আমাদের নিজস্ব সিস্টেম আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেই কারণেই আধার কার্ডের প্রক্রিয়া আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভেরিফিকেশন বা তথ্য যাচাইয়ের পর আধার নিয়ামক সংস্থায় আবেদনপত্র রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। স্থানীয় সার্কেল অফিসার প্রথমেই দেখবেন যে আধার কার্ডের আবেদনকারী বা তার মা-বাবা এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন কি না। যদি এনআরসি-র কোনও আবেদন পাওয়া না যায়, তবে আধার কার্ডের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হবে। এবং ভবিষ্যৎ এ ওই ব্যক্তি আর কখনও আধার কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে যদি কারোর NRC-তে আবেদন করা থাকে, তবে বাড়ি গিয়ে যাচাইয়ের পর আধার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে।
আবেদন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নোডাল এজেন্সি নিয়োগ
পাশাপাশি অসম সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এবার থেকে জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট ও রাজ্য সরকার আধার কার্ডের আবেদন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নোডাল এজেন্সি হিসাবে কাজ করবেন। তারাই যাবতীয় আবেদন খুঁটিয়ে দেখবে। সেক্ষেত্রে আবেদনপত্র যাচাইয়ের জন্য প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলা কমিশনার নিযুক্ত থাকবেন। তবে এই নিয়ম থেকে ছাড় পাবেন ভিন রাজ্য থেকে আসা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা। তাদের NRC-তে আবেদন করার কোনও প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে অসম সরকার।