সরকারি হোক বা বেসরকারি, কর্মীদের অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। বেতন থেকে শুরু করে নানা রকমের ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত বহু নিয়ম থাকে যা সকলেরই জেনে রাখা জরুরি বৈকি। বিভিন্ন ধরনের ছুটি হয়, যেমন সিএল, মেডিকেল লিভ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু ছুটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না নিলে শেষ হয় এবং কিছু ছুটি নতুন অর্থবছরের সঙ্গে যোগ হয়।
আবার অনেক ছুটি এমন আছে যেগুলি না নিলে তার বদলে টাকা দেওয়া হয়। ছুটিগুলিকে টাকায় রূপান্তর করার পর আপনার হাতে যে টাকা আসবে সেটা নিয়েও সরকারের তরফে করে কিছু নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। এটাকে সরকারি পরিভাষায় বলা হয় লিভ এনক্যাশমেন্ট। সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে এই নিয়ম ভিন্ন। হাইকোর্টে তেমনই একটি মামলার শুনানি ছিল। আর এই শুনানিতে আদালতের তরফে যা বলা হয়েছে তা শুনে সকলেই চমকে যেতে পারেন বৈকি।
বম্বে হাইকোর্টে চলছিল শুনানি
এক শুনানিতে বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি নিতীন জমাদার এবং বিচারপতি এমএম সত্যের ডিভিশন বেঞ্চ বড় পর্যবেক্ষণ করেছে। সেই পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, লিভ এনক্যাশমেন্ট হল চাকরিজীবীদের অধিকার। মূলত সরকারি মালিকানাধীন বিদর্ভ কোঙ্কন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের দুই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে তাঁদের জমে থাকা ‘প্রিভিলেজ লিভ’ এনক্যাশ করার অনুমতি দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট।
জানা গিয়েছে, আবেদনকারী দত্তরাম আত্মারাম সাওয়ান্ত এবং সীমা দত্তরাম সাওয়ান্ত বিদর্ভ কোঙ্কন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। বলেছিলেন, কর্মীরা ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করলে তাদের বিশেষ ছুটি নগদায়নের অধিকার হারাবেন কিনা।এরপর বিচারপতি নীতিন জামদার এবং বিচারপতি এম.এম. সাথাই ২০২৪ সালের ২ মে এই বিষয়ে একটি বিস্তৃত রায় দিয়েছেন।
অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার দত্তরাম সাওয়ান্ত এবং প্রাক্তন ক্যাশিয়ার সীমা দত্তরাম সাওয়ান্ত তিন দশকেরও বেশি সময় ব্যাঙ্কে কাজ করার পর ইস্তফা দিয়েছেন। তার নিবেদিত পরিষেবা সত্ত্বেও, ব্যাংক প্রাথমিকভাবে বিশেষ ছুটি নগদায়নের জন্য তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরপরেই তাঁরা বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। যদিও হাইকোর্ট তাঁদের জমে থাকা ‘প্রিভিলেজ লিভ’ এনক্যাশ করার অনুমতি দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট।
লিভ এনক্যাশমেন্ট কী?
বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের ছুটি দেওয়া হয়। অনেক সময়, কর্মচারীরা কোম্পানির দেওয়া বিভিন্ন ছুটি নিতে সক্ষম হন না, তাদের ছুটির কোটা ছেড়ে দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু ছুটির বিনিময়ে কর্মচারীদের অর্থ দিয়ে দেওয়া হয়। আর এই প্রক্রিয়াটিকেই লিভ এনক্যাশমেন্ট বলা হয়।