প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: বাংলাদেশে কিছুতেই থামছে না সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় সংখ্যালঘুদের বাড়ি ভাঙচুর এবং তছনছ এর ঘটনা নিত্যদিন খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। এদিকে আবার সংখ্যালঘুদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল। অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার গঠনের পর চার মাসে ১৭৪ জন জঙ্গি জামিনে মুক্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও তার জেরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতির প্রভাব এবার দু’দেশের সীমান্তে দেখা যাচ্ছে ৷ ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে অনুপ্রবেশ গতিবিধি।
বাংলাদেশি বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করেনি ভারতে
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং মহম্মদ ইউনূসের সরকার গঠনের পর থেকে উত্তাল বাংলাদেশ। আওয়ামি লিগ সমর্থক বা নেতা-কর্মীরাও বাংলাদেশ ছাড়তে উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু কেউই নাকি ভারতে বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করেনি। এমনই দাবি করল বিএসএফ। BSF প্রধান দলজিৎ সিং চৌধুরী জানিয়েছেন, “ গত ৫ আগষ্টের পর বাংলাদেশ থেকে যারাই ভারতে এসেছে, তারা বৈধ ভিসা নিয়েই সীমান্ত পার করেছে। প্রাথমিক ভাবে সীমান্তে অনেকেই ভিড় করেছিল বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করার জন্যে। তবে BSF এর তৎপরতা এবং BGB এর সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্যেই কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেনি।”
উদ্ধার সোনা ও রূপো
কিন্তু এই আবহে আরও একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে চলতি বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় ১১ হাজার ৮৬৬ কেজি মাদক উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি ১৪টি অস্ত্র উদ্ধার, ২২ জন পাচারকারীকে এনকাউন্টার করা হয়েছে এবং ৪১৬৮ জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে সোনা ও রুপো। সীমান্তে পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি মূল্যের ১৭৩ কেজি সোনা এবং ১৭৯ কেজি রুপো। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই সীমান্ত এলাকায় আরও বেশি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কার্যত মাছি গলার উপায় নেই।
সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের অন্তর্গত আট জেলার অধীনে থাকা প্রায় ১৯৩৭ কিলোমিটার ইন্দো বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন রয়েছে বাফে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে তৈরি হওয়া অস্থিরতার কারণে ইন্দো বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বিএসএফের তরফে। অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েনের পাশাপাশি থার্মাল ক্যামেরা, নাইট ভিশন ক্যামেরা, সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং সীমান্তে পারাপারে বসানো হয়েছে বায়োমেট্রিক মেশিন।
তবে BSF এর আইজি বলেন, ‘‘সীমান্তে টানা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে আগস্ট মাসের পর থেকে ভারত থেকে সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশে আসার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে BGB-র সঙ্গে আলোচনা করে ওই সমস্ত সমস্যা মেটানো হচ্ছে। আর ফেন্সিংয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারেরও ভাল সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রন্টিয়ারের অধীনে থাকা মোট সীমান্তের ১০ শতাংশে ফেন্সিং নেই। খুব শীঘ্রই সেই জায়গাগুলোতে ফেন্সিং লাগানো হবে।’’