প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বৈসারন উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। পর্যটকদের ধর্ম জেনে, বেছে বেছে হিন্দুদের টার্গেট করে গুলি করে খুন করেছিল জঙ্গিরা। তাতেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভের মেঘ সঞ্চার হয়েছে। প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে চারিদিকে। আর এই ঘটনার পর থেকেই ক্রমশ অবনতির দিকেই এগোচ্ছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। আর এই আবহেই এবার মক ড্রিলের (Mock Drill) নির্দেশ কেন্দ্রের।
মক ড্রিল করানোর নির্দেশ
আসলে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার আশঙ্কা করছে পাকিস্তানের মদত রয়েছে এখানে, তাই পড়শি দেশের প্রতি প্রতিশোধমূলক মনোভাব তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার একাধিক নিদর্শন দিয়েছে ভারত। ভিসা বাতিল থেকে শুরু করে সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে নয়া দিল্লি। পাকিস্তানকে প্রত্যাঘাত করার জন্য, রাজ্যে রাজ্যে মক ড্রিল (Mock Drill) করানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে আগামীকাল অর্থাৎ ৭ মে সিভিল ডিফেন্সকে মক ড্রিল করানোর নির্দেশ দিল কেন্দ্র। এমনকি এয়ার রেড সাইরেন থেকে ব্ল্যাক আউটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশও দিল মোদি সরকার।
কেন এই ব্যবস্থা?
ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর চলছে চিরুনি তল্লাশি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপও। উপত্যকার বিভিন্ন কোণায় মক ড্রিল চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী। আর এই আবহে এবার একাধিক রাজ্যকে আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার মক ড্রিল করার নির্দেশ দিল কেন্দ্র। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্যই এই মক ড্রিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে শেষবার এমন মক ড্রিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ১৯৭১ সালে। অর্থাৎ ঠিক যে বছর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, সেবার এমন মহড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশ
আসলে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষ নিজেদের আত্মরক্ষা করার ক্ষেত্রে কী কী করবে, তা শেখানোর জন্য রাজ্যকে মক ড্রিলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সাধারণ নাগরিকদেরও এবার মক ড্রিলের জন্য তৈরি করতে রাজ্যগুলিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে যে বিমান হানার সময় সাইরেন ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে হবে। আচমকা যদি হামলা হয় সেক্ষেত্রে কীভাবে সাধারণ মানুষ আত্মরক্ষা করবে সেটি শেখাতে হবে। এছাড়াও সাধারণ মানুষদের যেকোনও মুহূর্তে ব্ল্যাক আউটের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশেষ বিশেষ কারখানা, সংস্থাকে বাঁচাতে ক্যামোফ্লেজের প্রস্তুতি নিতে হবে। এবং হামলা হলে মুহূর্তের মধ্যে এলাকার খালি করতে মক ড্রিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত রবিবার রাতের দিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে ময়দানে নামে ভারতীয় বায়ুসেনা। রাত ৯টা নাগাদ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের একদম লাগোয়া ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সামরিক মহড়া করে বায়ুসেনা। সীমান্ত লাগোয়া এলাকা হওয়া ঘাঁটি একেবারে অন্ধকার করে দিয়ে মহড়া চালায় সেনা। আর এই আবহে গত কয়েকদিন ধরে একটানা সীমান্তে গুলিবর্ষন করে চলেছে পাকিস্তান। প্রায় প্রতিদিন রাতেই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে পাক সেনা। আর তার প্রতিশোধ নিতেই এবার বড় পরিকল্পনা করছে ভারত।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।