সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একদিকে চীনের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ (China US Trade War) দিনের পর দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, আর একদিকে মিষ্টি হাসি ফুটছে ভারতের সাধারণ মানুষের উপর। কিন্তু কীভাবে? আসলে এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে এখন ভারতীয় বাজারে ফ্রিজ, টিভি এবং স্মার্টফোনের দাম কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এমনকি শোনা যাচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলি ভারতীয় ইলেক্ট্রনিক্স নির্মাতা সংস্থাগুলির সঙ্গে এবার ৫% পর্যন্ত কম দামে পণ্য সরবরাহের সবুজ সংকেত দিয়েছে।
কেন ঘটছে এমন ঘটনা?
আসলে চীনা ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারকদের বিপদ এখন দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। কারণ আমেরিকার সঙ্গে চলতে থাকা শুল্কনীতির যুদ্ধ তাদের নতুন অর্ডার পেতে এখন সব থেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সাপ্লাই চেইনে বড়সড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বেশকিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, আমেরিকা চীনের পণ্যের উপর ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। যার জেরে মার্কিন বাজেটে চীনা পণ্যের চাহিদা দিনের পর দিন তলানিতে ঠেকছে।
শুধু তাই নয়, এখন সেই অতিরিক্ত উৎপাদিত পন্ন নিয়ে সমস্যায় পড়েছে চীনা কোম্পানিগুলির একাংশ। এর ফলে তারা ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে চাইছে, তাও একদম জলের দরে।
ভারতীয়দের কী লাভ হবে এতে?
ভারতের বেশ কিছু ইলেকট্রনিক উৎপাদনকারী সংস্থার কর্তারা বলছেন, যদি চীনা যন্ত্রাংশের দাম ৫% কমে যায়, তাহলে তারা প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত খরচ বাঁচাতে পারবেন। আর এর ফলে কী হবে? সূত্র দাবি করছে, এর ফলে গ্রাহকদের পকেটের উপর অনেকটাই চাপ কমবে। ফলে বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়বে।
এই বিষয়ে গোদরেজ অ্যাপ্লায়েন্সেসের হেড কমল নন্দী জানিয়েছেন, “চীনা নির্মাতারা এখন প্রবল চাপের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। কারণ আমেরিকা থেকে অর্ডার অনেকটাই কমে গিয়েছে। ফলে আমাদের সঙ্গে নতুন করে দর কষাকষি করতে চাইছে তারা।”
চীনের অতিরিক্ত উৎপাদন এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ!
বেশ কিছু সংস্থা বলছে, চীনের অধিক উৎপাদনের কারণে তারা ক্ষতির মুখে পড়ছে। একদিকে আমেরিকার রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তারা ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এমনকি ৫% পর্যন্ত দাম ছাড়ের কথাও বলেছে। এও শোনা যাচ্ছে, ভারতে যদিও এখন চাহিদা কিছুটা দুর্বল। তবে ছাড়ের সুযোগ কেউ হাতছাড়া করবে না।
ভারতীয় চাহিদার সমস্যা
ভারত সরকার ইতিমধ্যেই PLI স্কিম, QCO (Quality Control Orders) এবং আমদানি শুল্ক কিছুটা বৃদ্ধি করেছে, যাতে উৎপাদন অনেকটা বাড়ানো যায়। আর এর ফলে ধীরে ধীরে ভারতে তৈরি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। ভারত সরকারের মূল লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ১৪৫ থেকে ১৫৫ বিলিয়ন ডলার যন্ত্রাংশ এবং অ্যাসেম্বলি তৈরি করার।
আরও পড়ুনঃ ভারত ব্যবসার রাস্তা বন্ধ করায় কী কী অসুবিধে হতে পারে বাংলাদেশের?
চীনের সঙ্গে আমেরিকার এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলাফল ভারতীয় ক্রেতাদের উপর এবার লক্ষীলাভ হয়ে ধরা দেবে তা আশা করা যায়। ফ্রিজ থেকে শুরু করে টিভি, মোবাইলের দাম হয়তো এখনই কমবে না, কিন্তু আগামীদিনে বাজারে দেখা যেতে পারে বড়সড় চমক।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |