সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে অবশেষে ভারত ছিনিয়ে নিলো বিরাট সাফল্য। হ্যাঁ, বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের চরম দারিদ্র্যের হার (Poverty Rate) মাত্র 5.3 শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে 2011-12 সালে এই হার ছিল 27.1 শতাংশ।
11 বছরে দারিদ্র্যমুক্ত 269 মিলিয়ন মানুষ
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, 2011-12 সালে ভারতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করতেন 344.47 মিলিয়ন মানুষ। আর সেই সংখ্যা 2022-23 সালে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র 75.24 মিলিয়নে। অর্থাৎ, এক দশকের সামান্য বেশি সময়ে 269 মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র সীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।
কোন রাজ্যগুলি বেশি অবদান রাখছে?
রিপোর্ট বলছে, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং মধ্যপ্রদেশের মতো এই পাঁচটি রাজ্য 2011-12 সালে দেশের মোট চরম দারিদ্র্যের মধ্যে 75 শতাংশ দখল করে রেখেছিল। তবে 2022-23 সালের মধ্যে এই পাঁচ রাজ্যই দারিদ্র্য সীমা হ্রাসে দুই তৃতীয়াংশ অবদান রেখেছে।
বর্তমানে ভারতের অবস্থান কোথায়?
বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবার চরম দারিদ্র্যের হার নির্ধারণ করেছে মোটামুটি প্রতিদিন 3 ডলার খরচের ভিত্তিতে। হ্যাঁ, আর এই সুযোগে ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলে চরম দারিদ্র্যের হার নেমে 18.4% থেকে 2.8%-এ চলে এসেছে এবং শহরে 10.7% থেকে 1.1%-এ নেমেছে। অন্যদিকে পুরনো মানদন্ডে ভারতের দারিদ্র্যের হার 16.2% থেকে কমে এখন মাত্র 2.3%-এ দাঁড়িয়েছে।
জানিয়ে রাখি, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনামানের দিক থেকেও দারিদ্র্যের হার কমেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, 2005-06 সালে এমপিআই ছিল 53.8%। আর 2019-21-এ নেমে 16.4% এসেছে, এমনকি 2022-23 সালে আরো কমে 15.5%-এ দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ক্ষমতাচ্যুত হবেন ইউনূস, বাংলাদেশি সেনার চাপে বড় ঘোষণা
এই সাফল্যের পিছনে কোন কোন উদ্যোগ?
এই যুগান্তকারী পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে ভারত সরকারের চালু করা একাধিক প্রকল্প। যেমন- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, জনধন যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত, ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার, ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং রুলার ইন্টারনেট ইত্যাদি। এই প্রতিটি পদক্ষেপই দারিদ্র্যতা হ্রাসের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছে।
কোন জায়গায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান?
ওদিকে পাকিস্তানে চরম দারিদ্র্যের সংখ্যা গত কয়েক বছরে ৪.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬.৫ শতাংশ হয়েছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের হার ৭.৭% থেকে বেড়ে ৯.৩% হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক।