সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের ধনকুবের শিল্পপতি গৌতম আদানির (Gautam Adani) সংস্থা আবারও আন্তর্জাতিক বিতর্কে জড়ালো। হ্যাঁ, ইরান থেকে আমেরিকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভারতে এবার এলপিজি আমদানি করছে আদানি। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু আসল সত্যিটা কী?
উল্লেখ্য প্রতিবেদনে বলা রয়েছে যে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইরানের উপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকার সময় আদানি গোষ্ঠী গোপনে পারস্য উপসাগর দিয়ে এলপিজি সিলিন্ডার রপ্তানি করেছিল। আর তাদের মূল গন্তব্য ছিল ভারতের গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দর।
নিষেধাজ্ঞা ভেঙেই ইরান থেকে এলপিজি সরবরাহ?
প্রসঙ্গত ট্রাম্প প্রশাসন 2018 সালে ইরানের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এমনকি তেল এবং পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনাবেচাও যুক্ত ছিল ওই নিষেধাজ্ঞায়। আর হোয়াইট হাউস সাফ জানিয়ে দিয়েছিল যে, ইরানের সঙ্গে এই ধরনের লেনদেনে জড়িত দেশ সংস্থা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কবলে পরতে পারে।
তবে সূত্রের খবর, সে সময় এমন এক জাহাজের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল, যা ইরান থেকে এলপিজি নিয়ে সরাসরি গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। আর সেখান থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। সবথেকে বড় ব্যাপার, আদানি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীনে ছিল ওই জাহাজ।
আদানির পাল্টা জবাব
তবে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন আদানি গোষ্ঠী। হ্যাঁ, এক বিবৃতিতে তার মুখপাত্র বলেছেন যে, আমরা কোনও ইরানি পতাকাবাহী বা মালিকাধীন জাহাজকে নিয়ন্ত্রণ করি না। আর আমরা সব বন্দরে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই পণ্য আমদানি রপ্তানি করি।
এমনকি তারা আরও দাবি করেন যে, তাদের জ্বালানি আমদানি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমেই হয় এবং বৈধ কাগজপত্র যাচাই করেই সম্পন্ন হয়। এমনকি তাদের আমদানি বেশিরভাগ ওমান বা সোহার বন্দরের মাধ্যমে হয়। সুতরাং, ইরান থেকে কোনও পণ্য কেনার প্রশ্নই উঠছে না।
আরও পড়ুনঃ ATM না দিলেও অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৪০,০০০ টাকা! ১৪ বছর পর মিলল ন্যায়বিচার
ঘুষের অভিযোগে তদন্তে এসেছিলেন আদানি
তবে এটা প্রথম বার নয়। এর আগে 2023 সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন সিকিউরিটির এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বিচার বিভাগীয় দপ্তর আদানি গ্রীন এনার্জি লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল। তাদের দাবি ছিল যে, ভারতের একাধিক রাজ্যে উচ্চ দামে সৌর বিদ্যুৎ বিক্রি করছে আদানি গোষ্ঠী।
এমনকি তার জন্য অতিরিক্ত ঘুষও নেওয়া হচ্ছে। আর সেই ঘুষের তথ্য গোপন করেই আমেরিকার ব্যাঙ্ক ও লগ্নিকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। যদিও এই মামলার তদন্ত এখন স্থগিত রয়েছে, কিন্তু বিতর্কের আগুন থামেনি।