প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: নতুন বছর পড়তেই এবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে দেখা গেল এক নতুন মুখ। নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে উন্নীত হয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে জায়গা করে নিলেন জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। গতকাল অর্থাৎ সোমবার গভীর রাতে আইন মন্ত্রক একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এবং সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে রাষ্ট্রপতি দ্রোপদী মুর্মু নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে দেশের পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং হরিয়ানার মুক্ষ সচিব ডঃ বিবেক যোশীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেছেন।
কে এই জ্ঞানেশ কুমার? | Who Is Gyanesh Kumar?
আদতে জ্ঞানেশ কুমার হলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। ১৯৬৪ সালের ২৭ জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের আগ্রায় জন্ম তাঁর। IIT কানপুর থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন। এরপর ১৯৮৮ ব্যাচের কেরল ক্যাডারের অফিসার পদে কাজ শুরু করেন তিনি। আইসিএফএআই থেকে বিজনেস ফাইন্যান্সে স্নাতকোত্তর এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশগত অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর কোওপারেশন মন্ত্রকের সচিব ছিলেন ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। আধা সামরিক বাহিনীর সচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন পদে তিনি কাজ করেছেন।
২০২৪ সালের ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন জ্ঞানেশ কুমার। ঠিক তার দুই মাস আগেই IAS হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৫ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণ করেন জ্ঞানেশ কুমার। এদিকে তার ঠিক পরের দিনই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। গত ১১ মাস ধরে নির্বাচন কমিশনের সদস্য ছিলেন জ্ঞানেশ কুমার। রাজীব কুমার, সুখবীর সিংহ সন্ধু এবং জ্ঞানেশ কুমার মিলে লোকসভা নির্বাচন, জম্মু ও কাশ্মীর নির্বাচন, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি নির্বাচন সম্পন্ন করান।
জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে পৃথক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা
২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য সংরক্ষিত অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জ্ঞানেশ কুমারের। সেই সিদ্ধান্তের ফলেই জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জানা যায় জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন খসড়া বিলের দায়িত্ব নরেন্দ্র মোদি সরকার তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল যা অত্যন্ত গোপনে রাখা হয়েছিল সেই বিল। পাশাপাশি, রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রে ট্রাস্ট গঠনেও যুক্ত ছিলেন জ্ঞানেশ কুমার।
রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রে ট্রাস্ট গঠনেও যুক্ত ছিলেন!
অযোধ্যায় অর্থাৎ রাম জন্মভূমি নিয়ে যে মামলা দীর্ঘদিন ধরে সুপ্রিম কোর্টে চলেছিল, তার নথিপত্র দেখার দায়িত্ব ছিল জ্ঞানেশ কুমারের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। জ্ঞানেশ কুমার কোঅপারেশন সচিব থাকাকালীন ২০২৩ সালে মাল্টি স্টেট কোঅপারেটিফ সোসাইটিজ সংশোধন আইন পাস হয়, যার আওতায় সমবায় ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে এই পদক্ষেপের কথা বলা হয়। জানা গিয়েছে ২০২৯ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনার পদে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে। আর তাঁর কার্যকালের মধ্যে রয়েছে ২০টি বিধানসভা নির্বাচন, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন রয়েছে। ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। আর এই আবহেই এবার নয়া পদে উন্নীত হলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ভারত সেরা পশ্চিমবঙ্গ, বিশ্বব্যাপী পাখি গণনায় ৫৪৩ প্রজাতি নিয়ে শীর্ষে বাংলা
গতকাল অর্থাৎ সোমবার গভীর রাতে আইন মন্ত্রক একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে যে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে দেশের পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং হরিয়ানার মুখ্য সচিব ডঃ বিবেক যোশীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার আজ অবসর নিচ্ছেন। এর পরই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন জ্ঞানেশ কুমার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কমিটির বৈঠকে তাঁকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যদিও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধীর মত ছিল, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় না দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হোক। আর এদিকে জ্ঞানেশ কুমারের পদে নিযুক্ত হতে চলেছে বিবেক জোশী। তিনি ১৯৮৯ সালের হরিয়ানা ক্যাডারের IAS অফিসার। তাঁর এই নয়া পদের মেয়াদ ধার্য করা হয়েছে ২০৩১ সাল পর্যন্ত।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |