ছাগলের বদলে নিজের গলা কেটেই বলিদান! বকরি ঈদে ঘটে গেল হাড় হিম করা ঘটনা

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সেই অতীতকাল থেকেই উৎসবের দিন বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে! হিন্দুদের দুর্গাপুজো বা কালীপুজোয় পাঠা বলি, কিংবা মুসলিমদের ঈদের দিনে গরু কোরবানি! এভাবেই চলে আসছে যুগের পর যুগ। তবে এবার ঘটে গেল অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) দেউরিয়া জেলার এক বৃদ্ধ ব্যক্তি বকরি ঈদের দিন ছাগলের বদলে নিজের গলা কেটেই বলিদান দিলেন!

এমনকি পরিবারের সদস্যরা ছুটে গেলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আর এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এমনকি গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য।

কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?

মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ার গৌরী বাজার থানা এলাকার উদয়পুর গ্রামে। সেখানে থাকতেন 60 বছর বয়সী ইশ মোহাম্মদ আনসারি নামের এক ব্যক্তি। প্রতিবেশীরা বলছেন, তিনি ধর্মপরায়ণ এবং শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। 

ঈদের দিন সকালে গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে যান তিনি। সেখানে উপস্থিত সকলের সঙ্গে দেখাও করেন, কথাও বলেন। এমনকি বাড়িও ফিরে আসেন। তবে এরপরই ঘটে আসল ঘটনা। বাড়ির বাইরে একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে যান তিনি, যেখানে আগে থেকেই সমস্ত প্রস্তুতি সারা ছিল।

জানা গিয়েছে, সেখানে গিয়েই তিনি নিজের গলা কেটে ফেলেন। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় এক ঘন্টা ধরে তিনি ছটফট করতে থাকেন। পরিবারের সদস্যরা তার আর্তনাদ শুনে দৌড়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে গোরখপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়েছিল। তবে ততক্ষণ সময় পার! চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মারা যান ইশ মোহাম্মদ।

আরও পড়ুনঃ বেজায় অসম্মান! ইংল্যান্ডে ভারতীয় দল থেকে বাদ বড় তারকা! এন্ট্রি নেবেন এই তরুণ

লিখে গিয়েছিলেন একটি চিঠিও

তবে নিজের মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিঠি লিখে যান। সেখানে লেখা ছিল, একজন মানুষ যেমন ছাগলকে সন্তানের মত লালন পালন করে, আর শেষমেষ বলি দেয়, আমিও তেমনই একটি প্রাণ। আমি আল্লাহর কাছে নিজেকে বলি দিচ্ছি। আমাকে কেউ খুন করেনি। শান্তিতে কবর দিন আমাকে। কেউ ভয় পাবেন না। আমি যেখানে খুঁটি বসিয়েছি, সেখানেই যেন আমার কবর দেওয়া হয়। 

আর এই ঘটনার পর দেউরিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরবিন্দু কুমার বর্মা জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশের 112 নম্বরে ফোন করে জানানো হয়েছে, একজন ব্যক্তি গলা কেটে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। পরে গোরখপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবে তদন্ত চলছে।