বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: তখন মঙ্গলবার মধ্যরাত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে 26 জন নিরীহ ভারতীয়র খুনের বদলা নিচ্ছে বায়ু সেনা। 9টি পাক জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে চলছে একের পর এক মিসাইল বর্ষণ। কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) রোষে গুঁড়িয়ে যায় লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি।
আর এই সফল সিঁদুর অভিযানে মূলত খেল দেখিয়েছে ছোট আকারের বিধ্বংসী LMS ড্রোন। হ্যাঁ, আকারে ক্ষুদ্র হলেও পাকিস্তানের বুকে আঘাত হানতে এক ফোটাও পিছুপা হয়নি LMS ড্রোনগুলি। কিন্তু কীভাবে কাজ করে এই ড্রোন? কীভাবেই বা এত খুদে দস্যু হয়েও পাকিস্তানের মাটিতে হামলা চালাতে পারলো LMS? দেখে নিন।
কী এই LMS ড্রোন?
ভারতের LMS অর্থাৎ Loitering Munition System ড্রোনগুলি মূলত নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে শত্রুর ওপর আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায়। এটি মূলত সস্তা, ছোট ও উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন আত্মঘাতী ড্রোন, যা দীর্ঘক্ষণ ধরে আকাশে ঘোরাফেরা করার পর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে খুঁজে বের করে তাতে সজোরে আঘাত হানে।
তবে শুধু হামলা করেই থেমে থাকে না এই ড্রোন। মূলত শত্রুতে টার্গেট সেট করে আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে কড়া মাত্রার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিধন করে লক্ষ্যকে। জানিয়ে রাখি, আত্মঘাতী ড্রোন হিসেবে পরিচিত এই LMS লেভেল ফ্লাইটে শত্রুপক্ষের রাডার এড়িয়ে হামলা করতে সক্ষম।
কেন আত্মঘাতী ড্রোন হিসেবে পরিচিত LMS?
এই ড্রোনগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এগুলি মূলত লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করে তাতে আছড়ে পড়ার পর নিজ দেহেই বিস্ফোরণ ঘটায়। যার জেরে নিজে ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি শত্রুদেরও নিশ্চিহ্ন করে ছাড়ে! এই কারণেই এই ড্রোনের নাম আত্মঘাতী ড্রোন।
ড্রোনটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটি গুলিতে প্রয়োগ করা এই LMS ড্রোনের গতি মূলত ঘন্টায় 50 মাইল। তাছাড়াও ছোট আকৃতির হওয়ায় এগুলিকে সহজেই লুকিয়ে রাখা যায়, এবং আচমকা আক্রমণের সময় শত্রুর ওপর প্রয়োগ করা যেতে পারে।
এই ড্রোনগুলির দৈর্ঘ্য মাত্র কয়েক ফুট। সেই সাথেই, যেকোনও আবহাওয়ায় যেথা ইচ্ছা এই ড্রোনের ব্যবহার করা যায়। মূলত আকাশপথে নিঃশব্দে ঘোরাফেরা করার ক্ষমতা রয়েছে এই LMS ড্রোনটির।
কোথায় তৈরি হয় এই ড্রোন?
অনেকেই হয়তো জানেন না, ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম প্রধান অস্ত্র LMS ড্রোন তৈরি হয় দেশের মাটিতেই। হ্যাঁ, ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা DRDO এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে এই ড্রোন তৈরি করে থাকে। এতে সাধারণত, উচ্চ রেজলিউশনের ক্যামেরা, থার্মাল ইমেজিং সিস্টেম, নেভিগেশন, GPS ও এমন কিছু AI মডেল রয়েছে যা আধুনিক যুদ্ধে অনবদ্য।
অবশ্যই পড়ুন: দেশ আগে! ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে IPL? সিদ্ধান্ত জানালেন লিগ কর্তা
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত চলাকালীন ভারতীয় বায়ু সেনা কামিকাজে ড্রোনও ব্যবহার করেছিল। জানিয়ে রাখি, অপারেশন সিঁদুরে ব্যবহৃত এই কামিকাজে ড্রোনের সাথে জাপানের যোগ রয়েছে। কীভাবে? কামিকাজে হল একটি জাপানি শব্দ। মূলত কামি অর্থাৎ ঈশ্বর এবং কাজে অর্থাৎ বাতাস…. এই দুই মিলিয়ে কামিকাজের আক্ষরিক অর্থ ঐশ্বরিক বাতাস। আর এই সূত্রেই জাপানের সাথে যোগ রয়েছে এই ড্রোনের।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |