সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: তিন সপ্তাহ পর দেশের মাটিতে পা রেখেছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ (Purnam Kumar Shaw)। কিন্তু তার এই দেশে ফেরা শুধুমাত্র সীমান্ত আক্রমণের ঘটনা নয়, বরং পিছনে রয়েছে রহস্যজনক কাহিনী। চোখ বাঁধা অবস্থায় ঘন্টার পর ঘন্টা কীভাবে কাটিয়েছেন তিনি? ঘুমের ঘাটতি, বাথরুমে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়া, সবমিলিয়ে এক বিভীষিকাময় অধ্যায় কাটিয়েছেন ভারতের এই জওয়ান।
ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে?
ঘটনাটি ঘটেছিল 23 এপ্রিল। সীমান্তে দায়িত্ব পালন করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক সীমা অতিক্রম করে পাকিস্তানের মাটিতে পা ফেলেন পূর্ণম কুমার সাউ। সেই সময় পাকিস্তানের রেঞ্জার্স বাহিনী তাকে আটক করে ফেলে। তারপর শুরু হয় ভারতের তরফ থেকে তাঁকে দেশে ফেরানোর পন্থা। আর শেষ পর্যন্ত তিন সপ্তাহ পর 15 মে বুধবার সকালে তাকে অটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
মানসিক চাপে ভুগছিলেন পূর্ণম
এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পাকিস্তানে থাকাকালীন ওই সময়টুকুতে ভারতীয় জাওয়ানকে শারীরিকভাবে কোনও নির্যাতন করা হয়নি। তবে তার উপর মানসিক চাপ দেওয়া হয়েছিল প্রচুর। তিনি জানিয়েছেন যে, তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় অনেকক্ষণ রেখে দেওয়া হত।
এমনকি বাথরুমে যাওয়ার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হতো না। শুধু তাই নয়, ঘুম থেকে বারবার জাগিয়ে দেওয়া হতো। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাকে বিএসএফের গোপন অবস্থান এবং সূত্র নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো। আর এই সমস্ত চাপে পড়ে তিনি মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
ভারতের তরফ থেকে বারবার পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালানো হয়। তবে প্রতিবারই এর উত্তর দেওয়া হয়েছে, আমরা উপরের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। আর সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে দীর্ঘ তিন সপ্তাহ পর।
আরও পড়ুনঃ বিরাট ধাক্কা বাংলাদেশকে! ব্যবসার রাস্তা বন্ধ করল ভারত, লালবাতি পড়শি দেশের অর্থনীতিতে
দেশে ফেরার পর পরিবারে আনন্দের বন্যা
পূর্ণম সাউ দেশে ফেরার পথ তার বাড়িতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সবাই। তার পরিবার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ভারত সরকারের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিও। তার বাবা ভোলানাথ সাউ বলেছেন, আমি চাই আমার ছেলে আবার দেশের কাজ করুক। ও আবার যেন সীমান্তে ফিরে যায় দেশের সুরক্ষার জন্য।