প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এইমুহুর্তে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে এক আলাদাই ঝামেলা ঝঞ্ঝাট শুরু হয়েছে রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতিতে। আর এদেরকেই সবচেয়ে বেশি টার্গেট করছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের দাবি এরা সকলেই বাংলাদেশ থেকে গোপনে এদেশে এসে ঢুকেছে এবং প্রকৃত বাসিন্দাদের জমি-ঘরদোর কেড়ে নিয়ে বেদখল করছে। এমতাবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল অসমের (Assam) এক আমলার বিরুদ্ধে। তদন্ত শুরু করতেই উদ্ধার টাকার পাহাড়।
নগদ ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার!
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ সোমবার অসম সিভিল সার্ভিস অফিসার নূপুর বরার গুয়াহাটির বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে চালান অসমের ভিজিল্যান্সের আধিকারিকেরা। তবে শুধু গুয়াহাটির বাড়িতে নয়, একই সঙ্গে আরও একটি দল বরপেটায় নূপুরের ভাড়াবাড়িতেও তল্লাশি চালায়। সেই তল্লাশি অভিযানের সময় গুয়াহাটির বাড়ি থেকে নগদ ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি এক কোটির টাকার সোনার গয়নাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে যায় গুয়াহাটি এবং বরপেটায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই অফিসারকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই টাকা ও সম্পত্তির উৎস বের করার চেষ্টা চলছে।
কী বলছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী?
এদিকে সিভিল সার্ভিস অফিসারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান নিয়ে অসম মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন যে, “ সিভিল সার্ভিস অফিসার নূপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর থেকেই নজরদারি শুরু হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যখন নূপুর বরপেটা রেভিনিউ সার্কলে কর্মরত ছিলেন, সেই সময়ও নাকি তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের জমি হস্তান্তর এবং জমির রেজিস্ট্রেশন করিয়েছিলেন। তারপরেই সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই সার্কল অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল।” তবে এই কাণ্ডে শুধু নূপুর বরা এক জড়িত নয়, রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, ভিজিল্যান্সের বিশেষ দল নূপুরের সহযোগী লাত মন্ডল সুরজিৎ ডেকারও জড়িত, তাই তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: “কেশ স্পর্শ করারও অধিকার নেই কারোর!” মুসলিমদের ‘আশ্বাস’ দিলেন শমীক ভট্টাচার্য
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে গোলাঘাটের বাসিন্দা নূপুর বরা রাজ্য সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। বর্তমানে কামরূপ জেলার গোরোইমারিতে সার্কল অফিসার হিসাবে কর্মরত। তাঁর কর্মক্ষেত্রে বরাবরই নানা অভিযোগ উঠে এসেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার প্রত্যক্ষ উদাহরণ তবে বাড়ি থেকে অতিরিক্ত নগদ উদ্ধার। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংখ্যালঘু প্রভাবিত রেভিনিউ সার্কল এলাকায় বিপুল পরিমাণে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্তের ভিত্তিতে আশা করা যাচ্ছে আরো তথ্য প্রকাশ্যে আসবে।