বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতের সিন্ধু যুদ্ধ জয়! স্বাধীনতার পাশাপাশি গড়ে উঠল সিন্ধু জল (Indus River) বন্টন চুক্তিও। নেপথ্যে ভারতের 3 দিগপাল ইঞ্জিনিয়ার। জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পাশাপাশি দেশের মাটি ভাগ হয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তানের সাথে, আর ঠিক সেই সময়ে 3 জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বড় ভূমিকায় সিন্ধু নদের জলপ্রবাহের ক্ষেত্রে ব্যাপক অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যায় ভারত।
সিন্ধু যুদ্ধে ভারতকে জিতিয়েছিলেন এই 3 ইঞ্জিনিয়ার
সালটা ছিল স্বাধীনতার 1947। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাশাপাশি ভাগ হয়ে যাচ্ছে দেশের ভূখণ্ড। ঠিক সেই মুহূর্তে সিন্ধু নদের জলপ্রবাহের ক্ষেত্রে ভারতকে বড়সড় সুবিধা পাইয়ে দিলেন 3 সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এএন খোসলা, স্বরূপ সিং ও কাঁওয়ার সেন। সূত্রের খবর, একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে এই 3 মহারথীর দৌলতেই স্বাক্ষরিত হয়েছিল সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি। সুবিধা পেয়েছিল ভারত।
কীভাবে সিন্ধু নদের লড়াইয়ে ভারতকে জিতিয়েছিলেন 3 মহানুভব?
পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে জানা গেল, ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত রেখা আকার দায়িত্ব পেয়েছিলেন স্যার সিরিল ব্যাডক্লিফ। জানা যায় সেই সময়ে এএন খোসলা ও স্বরূপ সিং একসঙ্গে পাঞ্জাবের সেচ দপ্তরে কাজ করতেন। হঠাৎ একদিন ফিরোজপুরের একটি বড় সমস্যা নজরে আসে তাঁদের।
জানতে পারেন, ওই অঞ্চলে অবস্থিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খালের নিয়ন্ত্রণ বিন্দু পাকিস্তানের দখলে যেতে পারে। এ খবর জানতে পেরেই আগামী দিনে পরিণতি কী তা বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন 2 ইঞ্জিনিয়ার। এরপরই বিকানের জল দপ্তরে কর্মরত অবস্থায় থাকা কাঁওয়ার সেনকে গোটা বিষয়ে জানিয়ে সতর্ক করেন স্বরূপ সিং।
গোটা বিষয়টা শোনার পর তিনি বুঝতে পারেন ফিরোজপুর যদি পাকিস্তানে চলে যায় সে ক্ষেত্রে বিকানের লাইফলাইন অর্থাৎ গঙ্গা-খাল ভাগ হয়ে যাবে। এরপরই গোটা অঙ্ক বিকানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কাঁওয়ার। প্রধানমন্ত্রী জানতে পারলে পরবর্তীতে সেই কথা পৌঁছে যায় মহারাজা সদুল সিংয়ের কানে। এরপরই তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সাথে সম্পর্ককে হাত করে মহারাজা সিং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গঙ্গা খাল যদি ভাগ হয়ে যায় তবে বিকানেরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে হবে। যা কংগ্রেসের জন্য দুঃস্বপ্নের।
অবশ্যই পড়ুন: ‘১৬ তারিখের মধ্যে…’ উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় SSC-কে ‘ডেডলাইন’ হাইকোর্টের
এরপরই খবর যায় পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর কাছে। নেহেরু বিষয়টি জানতে পারা মাত্রই চাপ বাড়ে মাউন্টব্যাটেনের ওপর। খবর যায় সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল ও তাঁর সচিবের কাছে। তাঁরাও সীমান্ত কমিশনে নিজেদের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে ক্রমশ চাপ বৃদ্ধি করতে থাকেন। আর এই চাপের কারণেই শেষ পর্যন্ত ফিরোজপুর, জিরা ও ফজিলকা তেহসিল ভারতের অধীনে চলে আসে।
যার দরুণ পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত খালগুলির নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় ভারত। তবে ক্ষমতা ভারতের হাতে আসার সাথে সাথেই দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয় একাধিক টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত সমতা বজায় রাখতে স্বাক্ষরিত হয় সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি। যা ইতিমধ্যেই বাতিল করে পাকিস্তানকে বড় জবাব দিয়েছে মোদি সরকার।