প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: এখনও থামেনি সংঘর্ষ! শনিবার গভীর রাতে আবারও একে অপরের দিকে মিসাইল হামলা করল ইরান ও ইজরায়েল (Iran Israel Conflict)। আর এই আবহে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন ইরানের ওপর ইজরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই বিবৃতি প্রকাশের পরই ইজরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করল বিদেশ মন্ত্রণালয়।
বিবৃতির থেকে দূরত্ব বজায় রাখল ভারত!
সূত্রের খবর, গত শুক্রবার, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজরায়েলের বায়ুসেনা। তবে চুপ থাকেনি ইরানও, সমান প্রত্যাঘাত চালায় তাঁরাও। গতকাল, শনিবারও দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ তুমুল আকার ধারণ করে। যার দরুন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা SCO ইরানের ওপর ইজরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তবে এসসিও-র গ্রুপে ভারত থাকলেও সেই বিবৃতির থেকে দূরত্ব বজায় রেখে পৃথক ভাবে একটি নয়া বিবৃতি প্রকাশ করেছে ভারত। আর তাতেই বিশ্ব রাজনীতিতে উঠেছে এক তুমুল সমালোচনা।
প্রকাশ্যে এল SCO-র বিবৃতি
বস্তুত, SCO-র সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভারত, ইরান ছাড়াও রয়েছে চিন, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, রাশিয়া, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান। এই ৯ দেশের সম্মেলনে ইরান এবং ইজরায়েলি সংঘর্ষের বিরুদ্ধে SCO-র ওয়েবসাইটে যে বিবৃতি প্রকাশিত হয় সেখানে জানানো হয়, “ইজরায়েলের অসামরিক নিশানায় এই ধরনের আক্রমণের ফলে অনেক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের পরিপন্থী। আর এই হামলা (Iran Israel Conflict) ইরানের সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করে। আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে।”
এছাড়াও সেই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, “ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডকে ঘিরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান চায় এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলি।” পাশাপাশি বিবৃতিতে ইরানের সরকার এবং সে দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে।” এদিকে SCO-র এই বিবৃতিটি প্রকাশ্যে আসার পরেই ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে পৃথক একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, আর সেখানেই ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষ নিয়ে নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করা হয়।
কী জানালেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রক?
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন যে, “ভারত শুক্রবারই নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করেছে এবং এখনও সেই অবস্থানেই রয়েছে। আলোচনা এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইজরায়েল এবং ইরানকে সংঘর্ষ থামানো জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিরও এই লক্ষ্যেই চেষ্টা চালানো উচিত বলে মনে করছে ভারত। ”
এছাড়াও তিনি আরও জানিয়েছে, শুক্রবারই ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। দ্রুত কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি দেখার জন্যও ইরানি বিদেশমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঘুরে গেল খেলা! তুরস্ক, পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারতের বন্ধুর সাথে গোপনে চুক্তি সারল আজারবাইজান
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ ভারতের!
এর আগে নয়াদিল্লি ইরানের পরমাণু ও সামরিক পরিকাঠামোতে ইজরায়েলের বিমান হামলার পর বিদেশ মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে উভয় দেশকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এমনকি বিবৃতিতে উভয় দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে জানানো হয়েছিল যে, ইজরায়েল ও ইরানকে ‘সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত’ ভারত। উল্লেখ্য গত শুক্রবারই ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পরমাণুকেন্দ্রে বিমানহানার ‘ব্যাখ্যা’ এবং পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছিলেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এবং ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানান এবং এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আমি ভারতের উদ্বেগ শেয়ার করেছি এবং এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছি। নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।