বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ইরান-ইজরায়েল রক্তক্ষয়ী সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। সম্প্রতি সেই সংঘাতে নতুন মাত্রা জুগিয়েছে আমেরিকাও। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হামলায় পশ্চিমের অশান্তি আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। এমতাবস্থায়, নিজের পুরনো বক্তব্য ঝালিয়ে নিয়েছে ইরান।
ইজরায়েলের এক সময়কার বন্ধু হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, বন্ধ করা হবে হরমুজ প্রণালী। সেই মতো নাকি পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস করিয়ে নিয়েছে তেহরান। এমতাবস্থায়, বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বাণিজ্য পথ বন্ধ হলে দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাস অর্থাৎ LPG-র দামও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা (LPG Crisis) করছেন বহু বিশেষজ্ঞ। আর তা সত্যি হলে মাথায় হাত পড়বে 33 কোটি পরিবারের।
চরম বিপদে দেশের 33 কোটি হেঁশেল
ইরান যদি পাকাপাকিভাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, সেক্ষেত্রে চিনের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। কারণটা অবশ্য জলের মতো পরিষ্কার। আসলে তেল এবং রান্নার গ্যাসের মতো তরল জ্বালানির জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভারতকে নির্ভর করতে হয় বিদেশের ওপর। হিসেব বলছে, অন্তত LPG বা তরল জ্বালানির জন্য 66 শতাংশ ক্ষেত্রে ভারতের ভরসার জায়গা বিদেশ।
কাজেই হরমুজ প্রণালী যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে আমদানির প্রায় 95 শতাংশের রাস্তা পুরোপুরি বদ্ধ হয়ে যাবে। মূলত পশ্চিম এশিয়ার সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মতো দেশগুলি থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস ও অপরিশোধিত তেল আমদানি করে ভারত। তবে বিশ্বের ব্যস্ততম বাণিজ্য পথ বন্ধ হয়ে গেলে, সেই রাস্তাও বন্ধ হবে। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের 33 কোটি পরিবার।
মজুদ গ্যাস শেষ হলেই দেশজুড়ে তৈরি হবে LPG-র তীব্র সংকট
আসলে হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন অন্তত 2 লক্ষ ব্যারেল তেল ও বিপুল পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ হয় বিশ্বের বহু দেশে। সেই তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে নাম রয়েছে ভারতেরও। কাজেই ইরান যদি জেদের বশে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে ভারত যে কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে তা বুঝে গিয়েছেন অনেকেই।
এ প্রসঙ্গে, ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ইমপোর্ট টার্মিনাল, বটলিঙ্ক প্লান্ট, রিফাইনারির মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনেকটাই তরল জ্বালানি অর্থাৎ LPG মজুদ রয়েছে। তবে সূত্র বলছে, প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী ওই মজুদ লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস খুব বেশি হলে দু সপ্তাহ বা 16 দিন মতো চলতে পারে। তারপর?
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মজুদ থাকা LPG একবার শেষ হয়ে গেলে দেশজুরে তরল জ্বালানির সংকট বিরাট আকার নেবে। যদিও, দুঃসময়ের কথা মাথায় রেখে তেল ও তরল জ্বালানির ক্ষেত্রে বিকল্প পথ খুঁজছে ভারত।
অবশ্যই পড়ুন: যোগ রয়েছে ISI-র! নজরে BSF জাওয়ানরা, সীমান্তে বড়সড় কিছু ঘটাতে চলেছে বাংলাদেশ!
উল্লেখ্য, গলা ফাটিয়ে হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিলেও, আদতে এই বাণিজ্য পথ বন্ধ করার ক্ষমতা নেই ইরানের। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বহু বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে চিন, ভারতের মতো বহু দেশের ক্ষতি তো হবেই, কিন্তু তার থেকেও বেশি ক্ষতি হবে ইরানেরই। আসলে, ওদেশের অর্থনীতির মূল মেরুদন্ড তেল, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম পণ্য। ফলত, ইজরায়েলের সাথে জীবন মরণ সংঘর্ষের মাঝে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারবেন না খামেনি, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |