বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিরল সম্পদ নিয়ে চিনের দাপাদাপি এবার ঘুঁচিয়ে দেবে ভারত! আসলে বর্তমান বিশ্বে বৈদুতিক যানবাহন অর্থাৎ EV গাড়ি, বায়ু টারবাইন এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিরল চুম্বকের প্রায় 90 শতাংশ সরবরাহ চিনের নিয়ন্ত্রণে। মূলত সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই সম্প্রতি টারবিয়াম ও ডিসপ্রোসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির ওপর রপ্তানি নীতি কঠোর করেছিল ড্রাগন, যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃংখলে বিরাট আলোড়ন তৈরি করে।
এক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে, বিরল চুম্বকের ওপর চিনের এই আধিপত্য এবার ভারতের জন্য নতুন রাস্তা খুলে দেবে। রিপোর্টে এও দাবি করা হচ্ছে, আগামী 2030 সালের মধ্যে চিনের খনিজ সম্পদের পরিমাণ 51 শতাংশ এবং পরিশোধন 76 শতাংশে নেমে আসতে পারে। যা ভারতের জন্য নতুন দিগন্ত খুলবে বলেই আশা করছেন অনেকেই!
চিনের হুঙ্কার বন্ধ করবে ভারত!
সম্প্রতি মতিলাল ওসওয়াল প্রাইভেট ওয়েলথের অমিত গুপ্তা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বর্তমানে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ভারতে একটি নতুন খাতের জন্ম দিয়েছে। তাঁর বক্তব্য ছিল, আগে মূলত ভারত পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে বিরল খনিজ সম্পদ থেকে দূরে ছিল, তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। গুপ্তা জানান, ভারতে বর্তমানে বিশ্বের 8 শতাংশ বিরল সম্পদ মজুদ রয়েছে, যার পরিমাণটা প্রায় 6.9 মিলিয়ন টন।
গুপ্তার সংযোজন, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এত বেশি মজুদ রয়েছে, যা বর্তমানে খননের তুলনায় অন্তত 250 গুণ বেশি। আর এই মজুদই ভারতকে আগামীতে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃংখলে বড় জায়গা দিতে পারে। রিপোর্ট বলছে, চিনের কাছে যেখানে 44 মিলিয়ন টন বিরল সম্পদ মজুদ রয়েছে, সেই পর্বে দাঁড়িয়ে ভারতের কাছে রয়েছে 6.9 মিলিয়ন টন বিরল সম্পদ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে বিশ্বের সমুদ্র সৈকত ও বালির খনিজ পদার্থের 35 শতাংশই রয়েছে, যা মূলত বৈদ্যুতিক যানবাহন, ইলেকট্রনিক্স এবং প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হয়। যদিও পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2012 থেকে 2024 সাল পর্যন্ত দীর্ঘসময়ে ভারতের বার্ষিক উৎপাদন ছিল 2900 টন, যা সত্যিই খুবই কম।
এ প্রসঙ্গেই সম্প্রতি CSIS এর গ্রেসলিন বাস্করান স্পষ্ট করে বলেছেন, ভারত হয়তো চিনকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না, তবে এ কথা ঠিক যে ভারতের এই মজুদ সম্পদ আগামীতে বিকল্প সরবরাহ উৎস হয়ে উঠতে পারে। মূলত সেই কারণেই সরকার এখন IREL লিমিটেড এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব, ভর্তুকি ও প্রণোদনার ওপর জোর দিচ্ছে। সূত্রের খবর, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, তামিলনাড়, কেরালা এমনকি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে বিপুল পরিমাণ মোনাজাইট মজুদ রয়েছে। আগামীতে এই অঞ্চলগুলিতে খনিজের পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
অবশ্যই পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে সই করলেন ৬ ফুট ২ ইঞ্চির বাঘা ডিফেন্ডার! কে এই মার্তন্ড রায়না?
উল্লেখ্য, পৃথিবীর বিরল সম্পদের সরবরাহ শৃংখল শক্তিশালী করার জন্য বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিরল সম্পদ উৎপাদক অস্ট্রেলিয়ার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে ভারত। বলে রাখি, 2022 সালের মার্চ মাস নাগাদ, খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিটিক্যাল মিনারেলস অফিসের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ভারত বিরল খনিজগুলির জন্য অস্ট্রেলিয়ার সাথে একাধিক আলোচনা সেরেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আগামী দিনে চিনকে বড় ধাক্কা দেবে!
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |