প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ হল চীনের মধ্য অঞ্চলে অবস্থিত থ্রি গর্জেস ড্যাম। প্রতি বছরে এখান থেকে প্রায় ৮৮.২ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। তবে এবার সেই থ্রি গর্জেস ড্যাম এর থেকেও বড় বাঁধ তৈরি করতে চলেছে চিন সরকার। তাও আবার ব্রহ্মপুত্র নদের (Brahmaputra) উপর। দাবি করা হচ্ছে নতুন এই বাঁধের উৎপাদন ক্ষমতা তখন থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়ে তিনগুণ বেশি হবে। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চিন্তার মুখে পড়েছে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার।
চিন্তায় ভারত এবং বাংলাদেশ সরকার
ভৌগোলিক পরিকাঠামো অনুযায়ী তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদকে ইয়ারলুং সাংপো নদী বলা হয়ে থাকে। আদতে এই নদীটি হিমবাহ গলিত এবং পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে উৎপত্তি। এবং এই প্রবাহিত নদীটি হিমালয়ের গা ঘেঁষে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতে এই নদীটি ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। আর এদিকে সেই নদীর উপরেই চিন সরকার বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করতে চলেছে। যার ফলে বেশ চিন্তায় পড়েছে ভারত এবং বাংলাদেশ সরকার। কারণ ওই অঞ্চল শুধুমাত্র ভৌগলিক ভাবেই দুর্বল নয়, ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাও।
বাঁধ নির্মাণে ভয়াবহ প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতীয়দের জীবনে!
বিশেষজ্ঞদের তরফে জানানো হয়েছে, ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ হলে ব্রহ্মপুত্রের জলের ধারা বেশ প্রভাবিত হবে। এবং সরাসরি ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উপরও প্রভাব পড়বে। পরিণতি হয়তো কখনও খরা তো আবার কখনও বিধ্বংসী বন্যাও হতে পারে। এতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বিশেষ করে নদ অববাহিকার নিম্নভাগে বসবাসকারী ভারতীয়দের জীবনে বিপদ নেমে আসতে পারে। পাশাপাশি অরুণাচল প্রদেশ এবং অসমের মতো রাজ্যেও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উড়িয়ে দিয়ে বাঁধ নির্মাণের একের পর এক পরিকল্পনা করে চলেছে চিন। সেখানকার এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে বাঁধটি তৈরি করতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হতে চলেছে।
কী বলছে বিদেশ মন্ত্রক?
এমনিতেই সীমান্ত নিয়ে ভারত এবং চিনের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত রয়েছে, তার উপর জল নিয়ে টানাপোড়েন সম্পর্কে আরও বড় চির ধরতে চলেছে। যদিও চিনের বাঁধ নির্মাণের ঘোষণার পরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে নয়া দিল্লি। সূত্রের খবর, গত শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা গোটা প্রকল্পের উপর সারাক্ষণ নজর রেখে চলেছি এবং আমাদের স্বার্থরক্ষার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে চলেছি।” এছাড়াও এদিন বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছেন, “বেজিং নয়াদিল্লিকে আশ্বস্ত করে বলেছে যে, উচ্চ অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য ব্রহ্মপুত্রের নিম্ন অববাহিকায় কোনও ক্ষতি হবে না।