বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগের ঘটনা। প্রথমবারের মতো তালিবান বিরোধী নর্দান অ্যালায়েন্সকে সমর্থন করার জন্য তাজিকিস্তানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি আইওনিতে সেনা এবং বিমানবাহিনী মোতায়েন করেছিল ভারত। দীর্ঘ 20 বছর পেরিয়ে এবার সেই বিমানঘাঁটি থেকে সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহার করে নিল নয়া দিল্লি (Indian Airbase In Tajikistan)। জানা যাচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সেনা প্রত্যাহারের কাজ অনেক আগেই শুরু করে দিয়েছিল ভারত
ইন্ডিয়া টিভির রিপোর্ট অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় ধরে তাজিকিস্তানের ওই বিমানঘাঁটির উন্নয়ন এবং পরিচালনার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করেছে ভারত। তবে চার বছর আগে তাজিকিস্তানের সাথে ওই বিমানঘাঁটি সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায়, অল্প অল্প করে সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু করে দিয়েছিল নয়া দিল্লি। চলতি বছরের অক্টোবরে পৌঁছে একেবারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাজিকিস্তানের বিমানঘাঁটি থেকে সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের কথা জানাল ওই বিমানঘাঁটির ভারতীয় প্রতিনিধিরা।
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সোভিয়েত যুগে তৈরি হওয়া ওই বিমানঘাঁটিটির আধুনিকীকরণের জন্য 2000 সাল থেকে কাজ শুরু করে দেয় ভারত। জানা গিয়েছে, তাজিকিস্তানের ওই বিমানঘাঁটি পুনরায় নতুন করে তৈরি করতে এবং সেটা পরিচালনার জন্য কমপক্ষে 100 মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় 830 কোটি টাকা খরচ হয়েছে এ দেশের সরকারের। জানা যায়, বিপুল অর্থ খরচ করে যুদ্ধবিমান এবং ভারী পরিবহন বিমান অবতরণের জন্য বিমানঘাঁটির রানওয়ের দৈর্ঘ্যও বাড়িয়েছিল ভারত। এছাড়াও জ্বালানি বহনকারী বিমান থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছিল জায়গা।
এই বিমানঘাঁটিতেই সুখোই 30 যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছিল ভারত
সময়টা 2014 সাল। সে বার তালিবান বিরোধী নর্দান অ্যালায়েন্সকে লজিস্টিক এবং সরঞ্জাম সরবরাহের লক্ষ্যে কিছু সময়ের জন্য তাজিকিস্তানের ওই বিমানঘাঁটিতে সুখোই 30 যুদ্ধবিমান সহ বিমানবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মিলিয়ে প্রায় 200 জন ভারতীয় সশস্ত্র কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাজিকিস্তানের ফারখরে একটি সামরিক হাসপাতাল তৈরি করে নর্দান অ্যালায়েন্স এর সশস্ত্র কর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল ভারত। সব মিলিয়ে, তাজাকিস্তানের রাজধানী দুশানবে থেকে কমপক্ষে 10 কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এই বিমানঘাঁটির সাথে ভারতের বহু স্মৃতি জড়িয়ে।
অবশ্যই পড়ুন: ভারতের একমাত্র প্লেয়ার, যে প্রথম একাদশে খেললে দল হয় জেতে, নাহলে নষ্ফলা হয় ম্যাচ! হারের কোনও চ্যান্স নেই
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোর থেকে 20 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিমানঘাঁটি পাক অধিকৃত কাশ্মীর সংলগ্ন শুরু এক ভূখণ্ড। অনেকেই হয়তো জানেন না, এই বিমানঘাঁটি থেকে ভারতের সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের জন্য কাতার, সৌদি আরবের মতো দেশগুলির মাধ্যমে তাজিকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। বিশ্লেষক মহলের দাবি, চাপের মুখে ভারতের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষের অপেক্ষায় ছিল তাজিকিস্তানও!












