সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শেষ মুহূর্তে রক্ষা পেয়েছেন কেরলের নার্স নিমিষা প্রিয়া (Nimisha Priya)! ইয়েমেন নাগরিককে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্সের ফাঁসির সাজা আপাতত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের এক রিপোর্ট বলছে, 16 জুলাই তার ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইয়েমেনের স্থানীয় প্রশাসন সেই রায়কে আপাতত স্থগিত করেছে।
কেন স্থগিত হল নিমিষার মৃত্যুদণ্ড?
জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই ভারত সরকার রক্তমূল্য দিয়ে এই বিষয়টিকে মীমাংসা করার চেষ্টা করছিল। বলে রাখি, ইসলামিক আইনের রীতি অনুযায়ী, অপরাধীর পরিবার নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে নিহতের পরিবারকে রাজি করাতে পারে, যাতে তার মৃত্যুদণ্ড না হয়।
যদিও হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সানা শহরের এই মামলায় ভারত সরকার সেরকম কিছু করতে পারছিল না। কারণ ইয়েমেনে ভারতের কোনোরকম কূটনৈতিক জারিজুরি নেই। কিন্তু সৌদি আরবের ভারতীয় দূতাবাস নিজেই সমস্ত বিষয়টিকে পরিচালনা করেছে।
কে এই নিমিষা প্রিয়া?
জানিয়ে রাখি, কেরালের পালাক্কাড় জেলার কোল্লেঙ্গোড গ্রামের বাসিন্দা 38 বছরের নিমিষা প্রিয়া। তিনি একজন প্রশিক্ষিত নার্স। 2011 সালে স্বামী এবং কন্যাকে নিয়ে তিনি ইয়েমেনের উদ্যেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন নার্সিং-র কাজের জন্য। এমনকি পরে তার পরিবার ফিরে আসলেও তিনি সেখানেই থেকে যান।
তবে সেখানে এক ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে একটি ক্লিনিকও খুলেছিলেন তিনি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পর্ক বদলে যায়। নিমিষা অভিযোগ করতেন, মাহদি নাকি ভুয়ো কাগজপত্র বানিয়ে তাকে জোর করে বিয়ে করার দাবি তোলে। আর দিনের পর দিন শারীরিক থেকে শুরু করে মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে।
তিনি আরও দাবি করেন, মাহদি তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিল। আর বারবার তাকে মাদক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে রাখত। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে 2017 সালের মাহদিকে হত্যার অভিযোগে তাকে ইয়েমেনের পুলিশ গ্রেফতার করে। এমনকি 2020 সালে নিমিষাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল সেখানকার আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে কী বলল কেন্দ্র?
এই ঘটনার পর ভারতের সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টে এক মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, সরকার যতটা পর্যন্ত যেতে পারে, আমরা ঠিক ততটাই এগিয়েছি। এখন আর কোনও কিছু করার নেই। তবে এই বক্তব্য অনেকটাই হতাশ করেছিল। কিন্তু তার ঠিক পরের দিনই তাঁর মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হয়।
প্রসঙ্গত, নিমিষার মা প্রেমকুমারী গত বছর মেয়ের জন্য রক্তমূল্য চুক্তি করার আশায় ইয়েমেনে ছুটে গিয়েছিলেন। আর সেখানে তাকে ইয়েমেনের বসবাসকারী কিছু প্রবাসী ভারতীয় সহায়তা করেছিলেন বলে খবর। কিন্তু সমস্যাও রয়েছে প্রচুর। কারণ হুথি বিদ্রোহীদে সঙ্গে ভারতের সরাসরি কোনও সংযোগ নেই, আর হত্যাকাণ্ডে নিহতের পরিবার এখনো রক্তমূল্য গ্রহণেও রাজি হয়নি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |