প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এর ৩০ ডিসেম্বর, সকাল ১০টায় শ্রীহরিকোটা থেকে ISRO-র ৯৯তম উৎক্ষেপণটি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে সেই অভিযানে PSLV C60-র মাধ্যমে দুটি মহাকাশযানকে একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল মহাকাশে যেই দু’টি স্যাটেলাইট পৌঁছেছে অর্থাৎ স্পেডেক্স ১ ও স্পেডেক্স ২ এই দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে ডকিং করা। কিন্তু প্রথম দিকে ডকিং অভিযানে কিছুটা হোঁচট খেতে হয়েছিল ISRO কে। যার জন্য খানিক চিন্তিত হয়ে পড়েছিল সকলে। তবে এবার সেই চিন্তা নাশ করে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করল ISRO।
ভারতের মুকুটে জুড়ল নয়া পালক
গত ৭ এবং ৯ জানুয়ারি ISRO-র তরফ থেকে দু’বার ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু স্যাটেলাইটের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সেই প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়। আর তখনই একাধিক বিজ্ঞানী আশঙ্কা করেছিল যে, এই অভিযানে হয়ত লক্ষ্য পূরণের আগেই হাল ছেড়ে দেবে আর ডকিং করা হবে না। তবে সবার আশঙ্কাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল ISRO। রাশিয়া, আমেরিকা, চিনের পর এই অভিযানে এবার চতুর্থ নাম হল ভারতের।
অবশেষে সম্পন্ন হল স্পেস ডকিং
গত ১২ জানুয়ারি ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, ১৫ মিটার থেকে ৩ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কাছাকাছি আনার পরে ফের দুই উপগ্রহকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে ঠিক করা হবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। অর্থাৎ স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে যে কী এই স্পেস ডকিং? আসলে এই স্পেস ডকিং হল একটি জটিল প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে মহাকাশে দুই উপগ্রহকে একই বিন্দুতে অবস্থান করানো হয়। ডকিং মিশনে যে দুটি মহাকাশ যান ছিল তাদের নাম হল চেজার এবং টার্গেট, প্রতিটির ওজন ২২০ কিলোগ্রাম করে।
শুভেচ্ছা বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
মহাকাশে এই ঐতিহাসিক সাফল্যের পর ISRO-র তরফে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল যে, “স্যাটেলাইট ডকিং সফল হয়েছে। যা আমাদের দেশের কাছে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং গর্বের বিষয়।” এক্স হ্যান্ডেলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মহাকাশ মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিং। তিনি জানান, “স্পেসডেক্স মিশন মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা করল। যা ভারতের প্রযুক্তিগত শক্তি ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটালো।” অন্যদিকে ISRO কে ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ইসরোর এই কাজকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ১৪৫০০ কোটি বিনিয়োগ, ৭৫ হাজার চাকরি! উদ্যোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
জানা গিয়েছে এই স্পেস ডকিং প্রযুক্তি আগামী দিনে মহাকাশে মানব অভিযানের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে চলেছে। পাশাপাশি চন্দ্রাভিযানেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এমনকি স্পেস স্টেশন গঠনের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এই অভিযান সফল হওয়ায় আগামীতে আরও জটিল ডকিং সিস্টেমের পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা আছে ইসরোর।
আরও পড়ুনঃ অধিনায়ক পেয়ে গেল শাহরুখের দল?
ভারত নয়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিততে পারে এই দুই দল! হয়ে গেল ভবিষ্যদ্বাণী