সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: জয়পুরের সওয়াই মান সিং হাসপাতলে ঘটে গেলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গভীর রাতেই চারিদিকে ধোঁয়া আর চিৎকার চেঁচামেচির আতঙ্কে ঘুম ভাঙে সকলের। মুহূর্তের মধ্যেই একেবারে মৃত্যু মিছিলে পরিণত হয় গোটা হাসপাতাল। জানা যায়, হাসপাতালের ট্রোমা সেন্টারে ভয়াবহ আগুন (Jaipur Hospital Fire) লেগে মৃত্যু হয়েছে 9 জন রোগীর, যার মধ্যে 3 জন মহিলা ছিলেন। আর এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা রাজস্থানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা?
জানা গিয়েছে, রাত তখন 11:20। আইসিইউ ওয়ার্ডের স্টোর রুম থেকেই সূত্রপাত হয় আগুনের। আর ওই ঘরে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, চিকিৎসা সরঞ্জাম আর রক্তের নমুনা টিউব রাখা ছিল। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, কোনও শর্ট সার্কিট থেকেই ওই আগুনের সূত্রপাত। তবে সবথেকে বড় ব্যাপার, ওই ঘটনার সময় আইসিইউতে 11 জন রোগী ছিলেন। আর পাশের ওয়ার্ডে ছিলেন আরও 13 জন। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ও ধোঁয়ায় গোটা ওয়ার্ড ভরে যায়। এর হলে রোগী ও চিকিৎসা কর্মীরা ওখানেই আটকা পড়েন।
এদিকে এক দমকল আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা পৌঁছনোর আগেই গোটা ওয়ার্ড ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ভিতর দিক থেকে ঢোকাও সম্ভব ছিল না। বিপরীত দিক থেকে কাঁচের জানলা ভেঙে তাই আগুন নেভাতে হয়। সম্পূর্ণ আগুন নেভাতে প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লাগে। পাশাপাশি রোগীদের বিছানা সহ বাইরে রাস্তায় সরিয়ে না হয়। অনেককে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
চোখের সামনে মৃত্যু মিছিল
ওই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের সময় উপস্থিত এক রোগীর আত্মীয় জানিয়েছেন, আগে থেকেই ধোঁয়া বেরচ্ছিল। আমরা স্টাফদের বলেছিলাম। তবে তারা কোনও পাত্তা দেয়নি। বলেছিল এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তারপরেই আগুন ছড়িয়ে যায়। অন্য একজন বলেছেন, ফায়ার এলার্ম তো বাজেইনি, এমনকি ফায়ার এক্সটিংগুইশারও ছিল না। আমরা নিজেরাই রোগীদেরকে টেনে বের করি। ঘন্টাখানেক বাইরে রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স আসার জন্য। পাশাপাশি এক ওয়ার্ড বয় জানিয়েছেন, আমরা অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। খবর পাওয়া মাত্র সেখানে দৌড়ে যাই। তিন-চারজনকে বাঁচাতে পেরেছি। তবে ধোঁয়ার এত তীব্রতা, যে ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুনঃ ‘কলকাতায় জল হলে ছুটি, উত্তরবঙ্গে বন্যায় কার্নিভালে ব্যস্ত!’ মমতাকে নিশানা শঙ্কর ঘোষের
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর হাসপাতালে গিয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। তিনি এই গোটা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন এবং ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি এক উচ্চপর্যয়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে ওই আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য। এমনকি মৃতদের ও আহতদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।