সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: লাগাতার ধর্ষণের জেরে আত্মহত্যা করল আরএসএস (Kerala RSS) শাখার এক যুবক। জানা যায়, একেবারে বাচ্চা বয়স থেকেই যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন তিনি। শেষমেষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন বছর 26 এর যুবক আনন্দ আজি। তবে নেপথ্যে কি শুধুই যৌন নির্যাতন নাকি অন্য কিছু? মৃত্যুর আগে নিজেই জানালেন তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে।
যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা যুবকের
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, কেরলে তথ্য প্রযুক্তি কর্মী হিসেবে কাজ করতেন আনন্দ আজি। তাঁর বাড়ি কেরালার করতে আমের তামাক পালাক করে। তবে মাত্র 26 বছর বয়সেই তিনি আত্মহত্যা করেন। এমনকি আত্মহত্যার আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শিডিউল করে রেখে দিয়েছিলেন। এখানে আরএসএস এর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন তিনি।
রিপোর্ট মারফৎ খবর, বৃহস্পতিবার তিরুঅনন্তপুরমের এক লজ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর মৃত্যুর পর তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট পাবলিশ হয়। অনুমান করা হচ্ছে, তিনি মৃত্যুর আগেই ওই পোস্টটি শিডিউল করে রেখে যান। আর সেখানে তিনি আরএসএস এর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আনেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, কোনও প্রেমিকা নয়, আর্থিক সমস্যা নয়, পরিবারে কোনও অশান্তি নয়, ঝামেলা নয়। শুধু তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী মানসিক অসুস্থতা। নিয়মিত ওষুধ খেয়েও তিনি কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। আর এর পিছনে একমাত্র আরএসএস দায়ী।
Ananthu, a young man from Kottayam, Kerala, ended his life due to the tortures from RSS members!
He says in the note that he has never hated any other organization as much as the RSS in his life, and that no one should ever make an RSS worker their friend. pic.twitter.com/cIgTTw8cPq
— Aswin Trivandrum (@AswinTvm3) October 10, 2025
ছোট থেকে যৌন নির্যাতনের শিকার
ইন্সটাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমি কারোর উপর রাগ করছি ন। ছোটবেলাতেই আমার বাবা আমাকে আরএসএস-এ যুক্ত করে দিয়েছিলেন। আর সেখান থেকেই আমি আজীবন মানসিক আঘাত সহ্য করেছি। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন একজন ব্যক্তি আমার উপর ক্রমাগত যৌন নির্যাতন করেছিলেন। তখন আমার মাত্র তিন থেকে চার বছর বয়স ছিল। এমনকি আমি জানিওনা তারা কারা ছিল। তবে তারা আরএসএস এর সদস্য, এটুকু আমি জানি।
তিনি অভিযোগ করছেন, ওই জন্য নিগ্রহ তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যেও বিরাট প্রভাব ফেলে। এমনকি সেই ধাক্কা সামলাতে তাঁকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হত। সেই মানসিক অস্থিরতা থেকেই তিনি বের হতে পারেননি। সে কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এমনকি আত্মহত্যার আগে তিনি তাঁর মা-বাবাকে সতর্ক করেছেন যে, কোনও ভাবেই যেন আরএসএসের শাখায় কোনও শিশুকে ভর্তি না করে। পাশাপাশি সংঘের সঙ্গে যুক্ত কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বা বন্ধুত্ব না করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ তলিবানি হামলায় খতম ১২ পাকিস্তানি সেনা, ডুরান্ড লাইনে ভয়াবহ সংঘর্ষ দুই দেশের
ইতিমধ্যেই তাঁর এই পোস্ট সামনে আসতে রাজ্য-রাজনীতি থেকে শুরু করে গোটা দেশে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। শাসক দল সিপিএমের যুব সংগঠন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। আর পুলিশও তদন্ত চালাচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের তরফ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সমস্তটা তদন্তের উপরই নির্ভর করছে এখন।