২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর! কী হয়েছিল সেদিন? জানুন মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডের ইতিহাস

Published on:

Know more About Malegaon Blasts Case

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ 17 বছর পর ফের শিরোনামে উঠে এসেছে মুম্বইয়ের মালেগাঁও বিস্ফোরণ। কেননা, বৃহস্পতিবার এই বিস্ফোরণ মামলার সাথে জড়িত সকলকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার, মুম্বইয়ের NIA স্পেশাল কোর্টে মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার রায়দান ছিল। জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে এবার সেই মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর সহ 7 জনকে মুক্তি দিয়েছে আদালত। নেপথ্যে, উপযুক্ত প্রমাণের অভাব। কিন্তু এই মালেগাঁও বিস্ফোরণ আসলে কী? কজনই বা এই বিস্ফোরণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল?

মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ড

2008 সালের 29 সেপ্টেম্বরের রাতে, মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় শহর মুম্বই থেকে অন্তত 200 কিলোমিটার দূরে ম্যালেগাঁও ভিক্কু চকের কাছে একটি বাইকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বাইক ব্লাস্টের ঘটনায় মৃত্যু হয় অন্তত 6 জনের। আহত হন শতাধিক মানুষ। ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বলা বাহুল্য, শুরুর দিকে এই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তভার নিয়েছিল মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াড। তবে 2011 সালে গোটা ঘটনা চলে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা NIA-র হাতে। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিনব ভারত নামক একটি সংগঠন এই হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল।

পরবর্তীতে তদন্তে থেকে জানা যায় বিস্ফোরণের জন্য যে বাইকটিকে ব্যবহার করা হয়েছিল, তার রেজিস্ট্রেশন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুরের নামে। এরপরই সামান্য কিছু তথ্য হাতে নিয়েই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল পুরোহিত এই গোটা বিস্ফোরণের ঘটনায় সহযোগিতা করেছিলেন। এরপরই ওই বিস্ফোরণের মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। একই সাথে নাম উঠে আসে, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিকর, সুধাকর চতুর্বেদী, সমীর কুলকার্নি ও সুধাকর দিবেদীর।

তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই দায়ের হয় মামলা। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারার অধীনে খুন, বিস্ফোরণ, ষড়যন্ত্র, খুনের চেষ্টা ও সাম্প্রদায়িক হিংসার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। সেই মামলাই এতদিন চলছিল আদালতে। তবে, দীর্ঘ 17 বছর পর পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর সহ 7 অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দিল মুম্বইয়ের NIA স্পেশাল কোর্টে।

অবশ্যই পড়ুন: “ভারত জানে না কোন মুখে খেলবে…” ফের বিষ ওগরালেন আফ্রিদি! ভাইরাল হল ভিডিও

আদালতের পর্যবেক্ষণ

বৃহস্পতিবার, আদালতে রায়দান প্রক্রিয়া চলাকালীন বিচারপতি একে লাহোতি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, যা হয়েছে তা সমাজের জন্য অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধ। তবে আদালত শুধু নৈতিকতার যুক্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে না। এছাড়াও, হিন্দু সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যা দেওয়া বিস্ফোরণের ঘটনাটি নিয়ে বিচারকদের বক্তব্য ছিল, সন্ত্রাসবাদের কোনও ধর্ম হয় না, তবে নৈতিকতার ভিতিত্তে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা ঠিক নয়।

সবশেষে আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় যে প্রজ্ঞা ঠাকুর জড়িত রয়েছেন তার কোনও প্রমাণ নেই। বাইকটির আসল মালিক তিনি কিনা তাও জানা যায়নি। গাড়িটির চেচিস থেকে শুরু করে সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি পুরোহিতই যে বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছিলেন বা বোমা তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন এমন কোনও শক্ত প্রমান মেলেনি। সব মিলিয়ে, মৃতদের পরিবারকে 2 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের 50 হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েই অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥