প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: সম্প্রতি কর্মচারীদের সঙ্গে এক আলোচনায় এল অ্যান্ড টি-র চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যম কাজের পরিকাঠামো নিয়ে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। যেখানে তিনি কর্মীদের উদ্দেশে মন্তব্য করেন যে কর্মীদের সপ্তাহে সাত দিনই কাজ করা উচিত। এবং তিনি আরও বলেন যে, ‘আমি দুঃখিত যে আপনাদের দিয়ে রবিবার কাজ করাতে পারি না। যদি পারতাম, আমি আরও খুশি হতাম, কারণ আমি নিজে রবিবার কাজ করি।’ এছাড়াও সুব্রহ্মণ্যম আরও বলেন যে, ‘বাড়িতে বসে কী করবেন? কতক্ষণ আপনার স্ত্রীকে তাকিয়ে থাকবেন? স্ত্রীই বা কতক্ষণ আপনাকে তাকিয়ে দেখবেন?’ আর এই মন্তব্যের জেরে অনলাইনে তীব্র রোষের মুখে পড়েন এল অ্যান্ড টি-র চেয়ারম্যান। সাধারণ মানুষরা তো বটেই, অনেক সেলেব্রিটিও তাঁর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
কাজের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরলেন চিনা প্রসঙ্গ
এস এন সুব্রহ্মণ্যম তাঁর কর্মীদের কাজের পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা করার সময় তুলে ধরেছিলেন চিনের কাজের পরিকাঠামো। তিনি বলেন, “চিনারা নাকি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করে। এই জন্যই কাজের নিরিখে চিন সেরা। তাই যদি বিশ্বে সেরা হতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকেও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এবং সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে।” আর এই মন্তব্যের জেরেই চর্চা শুরু হয়েছে এল অ্যান্ড টি সংস্থার বেতন কাঠামো নিয়ে।
কর্মচারীদের গড় বেতনের তুলনায় কয়েকশো গুণ বেশি বেতন
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবর্শে এল অ্যান্ড টি কর্মচারীদের গড় বেতন ছিল ৯.৫৫ লাখ টাকা। কিন্তু সেক্ষেত্রে এল অ্যান্ড টি-র চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যমের বেতন ছিল ৫১ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, তাঁর বেতন গত বছরের তুলনায় ৪৩.১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ তাঁর মৌলিক বেতন ৩.৬ কোটি টাকা, কমিশন পান ৩৫.২৮ কোটি টাকা, অবসরকালীন সুবিধা পান ১০.৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য সুবিধা পান ১.৬৭ কোটি টাকার। তাই সব মিলিয়ে তিনি ৫১ কোটি টাকা পান। যা কর্মচারীদের গড় বেতনের তুলনায় ৫৩৪.৫৭ গুণ বেশি।
আর এই বেতন কাঠামো প্রকাশ্যে আসতেই এস এন সুব্রহ্মণ্যমের কর্মীদের উদ্দেশে করা মন্তব্য আরও জটিল আকার ধারণ করে। যার ফলে কর্পোরেট দুনিয়ায় ফের কর্মচারীদের কাজের ভারসাম্য এবং বেতনের ভারসাম্য নিয়ে নানা সমালোচনা উঠে আসে। এক নেটিজেন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘যাঁরা আপনার কোম্পানির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন, তাঁদের বাড়িতে আপনার মত ৭-৮ জন কর্মচারী থাকেন না, তাঁরা এইদিন নিজেদের সংসারের সমস্ত কাজ করার পাশাপাশি কাছের মানুষের সঙ্গে সময় কাটান। এছাড়াও অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন, ব্যবসায়ী হর্ষ গোয়েঙ্কা এবং ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা জ্বালা গুট্টাও এস এন সুব্রহ্মণ্যমের মন্তব্যের প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন।
গৌতম গম্ভীরকে নিয়ে KKR শিবিরে তুঙ্গে অশান্তি