প্রীতি পোদ্দার, গ্যাংটক: স্বপ্নের নগরী হিসেবে বরাবরই পরিচিত সিকিমের (Sikkim) লাচেন এবং চুংথাং। তুষার চাদরে ঢেকে থাকা নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সেই জায়গা। প্রতিটি অংশ এবং প্রতিটি কোণা যেন মুগ্ধ করে তোলে সকল পর্যটকদের। তবে বিগত বছরগুলিতে একের পর এক ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল সিকিম। তিস্তার ভয়ানক বন্যা, অতিবৃষ্টি বা ধস বারে বারে সিকিম পর্যটন শিল্পে একের পর এক বাঁধার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু গত কয়েক দিনের তুষারপাতে নতুন ভাবে উন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল পর্যটন শিল্পে এবার তাতেও এল ফের দুর্যোগ।
সিকিমে ফের ধস
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি মরশুমে পাহাড় প্রেমীদের বড় সুখবর এনে দিয়েছিল সিকিম প্রশাসন। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল লাচেনের রাস্তা। বেঁধে দেওয়া হয়েছিল কিছু নিয়ম। আর তার উপর তুষারপাত শুরুর খবর হতেই সেখানে নামে পর্যটকদের ঢল। কিন্তু এই ধসের জন্য উত্তর সিকিমের রাস্তা বন্ধ হওয়ায় হতাশা পর্যটকদের মধ্যে। তাঁদের ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনায় রীতিমতো জল ঢেলে দিল পাহাড় ধস। ফের সিকিমের পর্যটন ব্যবস্থায় নেমে এল শোকের ছায়া।
ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে লাচেন রুট
হালকা তুষারপাতের পর গত শুক্রবার বেলা দশটা নাগাদ হঠাৎ রংমা রেঞ্জ এলাকায় হুড়মুড়িয়ে মাটি-পাথর জুড়হুড়িয়ে নেমে অবরুদ্ধ হয় চুংথাং থেকে লাচেন যাতায়াতের পথ। মঙ্গন থেকেও গত শুক্রবার লাচেনে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না পর্যটকদের। ওই ঘটনার জেরে শুক্রবার কিছু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন লাচেন এবং চুংথাংয়ে। কিছুটা ধস সরিয়ে পর্যটকদের রাতের মধ্যে গ্যাংটকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে সিকিমের মঙ্গন জেলা প্রশাসন। শনিবার ওই রুটে পর্যটকদের পার্মিট ইস্যু করা হয়নি। এদিকে পরের দিনই অর্থাৎ রবিবার সেখানে প্রবল ভূমিধস দেখা দিয়েছে। তার জেরে গতকাল সকাল থেকে ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে লাচেন রুট।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ধস সরিয়ে সড়ক ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে অনেকটা সময় লাগবে। তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য লাচেন ও চুংথাং ভ্রমণের পার্মিট ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছে সিকিম পর্যটন দফতর। তাই ইতিমধ্যে যাঁরা সিকিমের টিকিট বুক করে রেখেছেন তাঁদের সেই টিকিট হয়তো বাতিল হতে চলেছে। এদিকে আবার পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু উপত্যকা এবং নাথুলা সীমান্তে ভারী তুষারপাত চলছে। তাই কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘যেভাবে লাগাতার তুষারপাত চলছে তাতে পর্যটকদের আগেই সতর্ক করা হয়েছে। শনিবার ছাঙ্গু উপত্যকা এবং নাথুলা সীমান্ত বরফের চাদরে মুড়ে গিয়েছে। কিন্তু তবুও পর্যটকরা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এখানে এসেছেন।’