বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: একজন রেল যাত্রী যিনি নিজের ব্যাগপত্র নিজে বহন করেন, সেগুলি সুরক্ষার দায়িত্ব একান্তই তাঁর। ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railways) চুরির ঘটনার জন্য একেবারেই দায়ী নয়, যদি না তাতে কোনও রেল কর্মীর যোগ থাকে। এক রেল যাত্রীর চুরি সম্পর্কিত মামলার রায় দিতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালতের তরফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রেল কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া বাকি কোনও চুরির ঘটনার জন্য রেল দায়ী থাকবে না।
চুরির দায়ভার নেই রেলের..
সম্প্রতি, 2013 সালের নাগপুরগামী ট্রেনের এক যাত্রীর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সহ ব্যাকপ্যাক চুরির মামলায় রায় দিতে গিয়ে, দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজা জানান, ভারতীয় রেলের যাত্রী, যিনি নিজের লাগেজ নিজেই বহন করেন, তার সুরক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাঁকে নিজেকেই নিতে হবে।
ভারতীয় রেলওয়ে চুরির ঘটনার জন্য কোনও ভাবেই দায়ী নয়, যদি না রেলের কোনও কর্মকর্তা তাতে যুক্ত থাকেন। হ্যাঁ, সাম্প্রতিককালে রেল যাত্রীদের জন্য এমন খবরই শুনিয়েছেন দিল্লি আদালতের বিচারপতি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আজ থেকে প্রায় 12 বছর আগেকার ঘটনা। 2013 সালে নাগপুরগামী ট্রেনে যাত্রাকালীন সময়ে ক্যামেরা, চার্জার, ল্যাপটপ, চশমা, প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও এটিএম কার্ড সহ গোটা ব্যাকপ্যাক চুরি হয়ে গিয়েছিল শৈলেন্দ্র জৈন নামক এক যাত্রীর। এরপরই তিনি নাকি ক্ষতিপূরণের জন্য আদালতে মামলা দাখিল করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে দিল্লি হাইকোর্টের তরফে সেই আবেদন খারিজ করা হয়।
ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, তাঁর সাথে চুরির ঘটনা ঘটেছে জানা সত্বেও রেলকর্মীরা একেবারেই আশানুরূপ আচরণ করেননি। বরং, তাঁর সাথে বিরূপ আচরণ করা হয়েছিল। ব্যক্তির দাবি, অ্যাটেন্ডেন্ট তাঁর সাথে অভদ্র আচরণ করেন। শেষ পর্যন্ত টিটির সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে চলে যান তিনি। ওই যাত্রীর আরও অভিযোগ, সেদিন টিটির সাথে কথা বলতে চাইলেও তাঁর দেখে মেলেনি।
এমনকি, সেদিন এমন দুর্ভোগ সত্ত্বেও এগিয়ে আসেনি কোনও রেল পুলিশ কর্মী। পরবর্তীতে রেলের তরফে এমন আচরণের পর দিল্লি কনজিউমার ফোরামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। এরপর, যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির জন্য রেলের কাছে 2 লাখ টাকারও বেশি দাবি করেন ওই যাত্রী। তবে শেষ পর্যন্ত নাকি তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ 5 হাজার টাকা ধরানো হয়েছিল।
এরপর রাজ্য ফোরামে বর্ধিত ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য পূর্ব আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পুনরায় অভিযোগ দাখিল করেন ওই ব্যক্তি। মূলত রেলওয়ের তরফে অবহেলা, হয়রানি, মানসিক যন্ত্রণা, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খোয়ানো ও মামলার খরচ বাবদ তাঁকে 1 লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তাতেও নাকি লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন ওই যাত্রী।
এরপর বেশ কয়েক ঘাটের জল খেয়ে শেষ পর্যন্ত ফের দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সেখানে রেল কর্মকর্তাদের অবহেলা ও তাঁর ক্ষতির কথা তুলে ধরেন ওই ব্যক্তি। পরবর্তীতে ভারতীয় রেল ও ওই যাত্রী যাবতীয় যুক্তি শোনার পর আদালত জানায়, ট্রেনের দরজাগুলি লক রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব টিটির।
অবশ্যই পড়ুন: বলি দিতে যাওয়া পরিবারের গাড়ি পড়ল নদীতে, ৪ জনের মৃত্যু! প্রাণে বাঁচল ‘পাঁঠা’
তবে এমন কথা কোথাও উল্লেখ নেই যে, ট্রেনের দরজা সেই সময় খোলা ছিল, যার ফলে অসাধু ব্যক্তিরা ট্রেনের মধ্যে ঢুকে লুটপাট চালিয়েছে। আদালত আরও জানায়, চুরির ঘটনার দায়ভার রেল তখনই নেবে যখন সেই ঘটনার সাথে রেলের কর্তব্যরত অফিসারদের যোগ থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |