কলকাতাঃ বাংলাদেশে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে। তবে এই প্রতিবাদ এখন হিংসাত্মক রূপ ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ছাত্র সংঘর্ষে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার প্রভাব বাংলা ও বাংলাদেশ এই জায়গাতেই পড়েছে। তবে বিষয়টির ওপর নজর রাখছে ভারত। গত ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশের হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী উচ্চ বেতনের সরকারি চাকরির জন্য বৈষম্যমূলক এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীরদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের পক্ষপাতিত্বমূলক একটি নিয়োগ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। তবে এসবের মধ্যে একটা পশ্ন বারবার চাগাড় দিচ্ছে। আর সেটা হল, দিল্লি কি ওপার বাংলায় শান্তি সেনা পাঠাবে?
বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠাবে ভারত?
ভারত তার প্রতিবেশী দেশে শান্তিসেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। হিংসায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশ নিয়ে ভারত সহ গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে। গোটা বিশ্বের লাখ লাখ পড়ুয়া বাংলাদেশে আটকে রয়েছে। যদিও তাঁদের সরাতে বিভিন্ন সরকার কাজ চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে শয়ে শয়ে পড়ুয়া জীবন রীতিমতো হাতে নিয়ে ভারতে ফিরেছেন।
এদিকে ভারত বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবেই আখ্যা দিয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশে গত বহুদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভগুলি বহু লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং দেশে অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে প্রকাশ্যে জনগণের কাছে এসে বলেছেন, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি, আপনারা যা বলছেন তার সঙ্গে আমরাও একমত। তবে বিষয়টি আদালতের কাছে রয়েছে এবং আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল বিএনপি এই বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়েছে, এতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যোগ হয়েছে। আইএসআইয়ের মতো আরও কিছু দলও থাকতে পারে, যা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে হতে পারে। এ ধরনের রিপোর্ট আছে, যদিও সেগুলো সত্যি কি না, তা সরকারের তদন্ত করে দেখা উচিত। তবে কিছু মানুষ পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মাথাব্যাথা
বাংলাদেশ নিয়ে যে ভারতের মাথাব্যাথা একেবারেই নেই তা বলা ঠিক না। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুদীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ফলে সেখানকার যে কোনও ধরনের অস্থিতিশীলতা ভারতের নিরাপত্তার জন্য একটি সম্ভাব্য হুমকি হতে পারে। এদিকে চিন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকেও কড়া নজর রেখেছে ভারত। কেন্দ্র তিস্তা প্রকল্পে চিনের আগ্রহ এবং বাংলাদেশি কিছু মন্ত্রীর চিনপন্থী প্রবণতা-সহ চিনের প্রতি শেখ হাসিনার প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। তবে এতকিছুর পরেও যদি হাসিনা সরকারের হাত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তাহলে ভারতকে এগিয়ে আসতেই হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠাতে দশবার ভাববে না মোদী সরকার। ফলে আগামী দিনে কী হয় এখন সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুনঃ ‘রাজাকার’ কারা? এর মানেই বা কী? বাংলাদেশে এদের অবদান জানলে ঘৃণা আসবে
এর আগে ১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কা সরকারের সাথে চুক্তি করেছিলেন তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সেই সময় এলটিটিইর হাত থেকে অস্ত্র সরাতে শ্রীলঙ্কায় শান্তিবাহিনী পাঠানো হয়েছিল। এবারেও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে বেশি বাড়াবাড়ি হলে নরেন্দ্র মোদীও একই পদক্ষেপ নিতে পারেন।