বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতের সাথে যুদ্ধে পাকিস্তানকে একেবারে সরাসরি সমর্থন করেছিল তুরস্ক। 2023 সালের অপারেশন দোস্তের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে একেবারে খোলাখুলি ময়দানে নেমে পড়েছিল আঙ্কারা। ভারতের ওপর আঘাত হানতে পাকিস্তানকে সব রকম যুদ্ধাস্ত্র থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র তবে ভয়ানক ড্রোন দিয়ে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়েছিল পাক প্রেমি তুরস্ক।
যদিও ভারতের তরফে পরবর্তীতে পাকিস্তান প্রেমী তুরস্ককে যোগ্য জবাব দিয়েছেন দেশবাসী। বয়কটের ডাকে বর্জন করা হয়েছে একাধিক তুর্কি পণ্য। এহেন আবহে এবার ইসলামাবাদের কাছের দোস্ত আঙ্কারাকে বড় জবাব দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। কিন্তু কীভাবে? আপাতত যা খবর, G-7 সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
তবে সেই সফরে কানাডা যাওয়ার পথেই রাস্তায় জ্বালানি ভরতে সাইপ্রাসের থামবে মাননীয়র বিমান। বিশ্বের বহু দুঁদে কূটনীতিবিদ মনে করছেন, সাইপ্রাসে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিরতি পাক বন্ধু তুরস্ককে বড় ধাক্কা দেবে। আসলে পাকিস্তানের প্রতি প্রেম দেখিয়ে তুরস্ক যে কতটা বোকামো করেছে, তা বারংবার বোঝানোর পাশাপাশি সাইপ্রাসে বিমান থামিয়ে নতুন করে সেই বিষয়টি মগজাস্ত্রে ঢুকিয়ে দেবেন মোদি।
সাইপ্রাসে বিমান থামিয়ে তুর্কিকে বড় বার্তা দেবেন মোদি
গোটা বিষয় খোলসা করে বলতে গেলে, একটা সময় গ্রিস এবং রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল সাইপ্রাস। তবে ষোড়শ শতকে ভূমধ্যসাগরীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রটি অটোমান সাম্রাজ্যের দখলে চলে যায়। এই সময় দক্ষিণ ইউরোপ থেকে শুরু করে পশ্চিম এশিয়া হয়ে একেবারে উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত অটোমান সাম্রাজ্যের বিশাল বিস্তৃতি ছিল। তবে পরবর্তীতে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে অটোমান সাম্রাজ্য। যার জেরে 1878 সালে সাইপ্রাসের কিছু অংশ কব্জা করে নেয় ব্রিটেন।
অবশ্যই পড়ুন: চীন রপ্তানি বন্ধ করতেই খেল দেখাল ভারত! সব পরিকল্পনা বানচাল জিনপিং-এর
মূলত সামুদ্রিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কৌশলগত গুরুত্ব বুঝেই এই অঞ্চলটিকে দখলে নিয়েছিল ব্রিটিশরা। তবে পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসন দুর্বল হতে থাকলে 1960 সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাইপ্রাস। আগেই জানানো হয়েছে, পরবর্তীতে এই স্বাধীন রাষ্ট্র গ্রিসের কবজায় গেলেও বর্তমানে এই ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রটির এক তৃতীয়াংশ পাক বন্ধু তুরস্কের দখলে। বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক চাপ সত্বেও দখল করা এলাকা থেকে সেনাবাহিনী সরায়নি আঙ্কারা।
আর সেই কারণেই ওই এলাকার পোশাকি নাম টার্কিস রিপাবলিক অফ নর্দান সাইপ্রাস। আসলে এটি আঙ্কারা স্বশাসিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। কানাডা সফরের সময় মাঝ রাস্তায় জ্বালানি তুলতে এই সাইপ্রাসেই থামবে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বিমান। যেই বিষয়টিকে বিরাট মাস্টারস্ট্রোক হিসেবেই দেখছেন বহু কূটনৈতিক। তাঁদের অধিকাংশের দাবি, তুরস্কের দখলে থাকা এই অঞ্চলে থামার মধ্যে দিয়ে পাক বন্ধু তুর্কিকে বড় বার্তা দিতে চাইছেন মোদি।
আসলে সাইপ্রাসের জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখায় তুরস্কের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করা যায় কিনা সে বিষয়ে নতুন করে কৌশল তৈরির চেষ্টা করছে দিল্লি। ফলত বলাই যায়, মোদি সাইপ্রাসে থামলে তা তুরস্কের রক্তচাপ যথেষ্ট বাড়িয়ে দেবে।