প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: গত ৫ আগষ্টের পর থেকেই বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক পটভূমি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই দেশ জুড়ে হারিয়ে যাচ্ছে গোটা রাষ্ট্রের সংস্কৃতি। দিকে দিকে ভাঙচুর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিবের ধানমন্ডির বাড়ি। শুধু তাই নয়, ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনেকটাই। কিন্তু বর্তমানের পাঠ্যবইতে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকেও খাটো করে দেখানো হচ্ছে। যা নিয়ে তুঙ্গে চলছে বিতর্ক। তাই এবার এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বর্তমান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসকে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ধরলেন মোদি
গতকাল ছিল বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। তাই এই দিনে পড়শি দেশের সকল নাগরিককে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনুসকে মুক্তি যুদ্ধের গুরুত্ব নিয়ে বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চিঠির শুরুতেই তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই দিনটি আমাদের দু’দেশের ইতিহাস এবং ত্যাগের প্রতীক। কারণ এই দিনটিই আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে। ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের সূচনাই ঘটে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। যা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বিকশিত হয়েছে। শান্তি, স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধির জন্য এবং একে অপরের স্বার্থ ও উদ্বেগের প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে এই অংশীদারিত্বকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইতিহাসের পুরোনো স্মৃতি ঘাটলে জানা যাবে যে ১৯৭১ সালে ভারতের মসনদে যখন ইন্দিরা গান্ধী নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। সেই সময়, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই চলছে পূর্ব পাকিস্তানের। এই লড়াইয়ে যদি ইন্দিরা গান্ধী সামিল না হতেন, ভারত যদি মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে না দাঁড়াত তাহলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম ও নিশান থাকত কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ইতিহাসবিদদের। কিন্তু আজ ভারতের এই অবদানকেই অস্বীকার করছে ইউনুসের বাংলাদেশ। নতুন পাঠ্যবইতে খাটো করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা। যা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অভিনন্দন জানালেন দ্রৌপদী মুর্মু
এই আবহেই আগামী ৩-৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এর ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার কথা শোনা গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে ঢাকা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি জানালেও, এখনও পর্যন্ত ভারতের তরফ থেকে স্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর একটি সংসদীয় কমিটিকে বলেছিলেন যে ঢাকার এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের অনুরোধটি বিবেচনাধীন রয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। পড়শি দেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের উদ্দেশে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় দ্রৌপদী মুর্মু জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার, ভারতের জনগণ ও আমার পক্ষ থেকে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে জাতীয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
আরও পড়ুনঃ ড্রাগনের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে বিরল গুপ্তধন! ভারতের ‘মিশন আফ্রিকা’য় ভয়ে চীন
এছাড়াও দ্রৌপদী মুর্মু আরও বলেন যে, “বাণিজ্য, বহুমুখী সংযোগ, উন্নয়ন অংশীদারত্ব, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা এবং মানুষে মানুষে বিনিময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমুখী। এছাড়া ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ এবং ‘পূর্বমুখী নীতি’, আমাদের ‘সাগর’ মতবাদ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ।তাই ভারত একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।