কলকাতাঃ যত সময় এগোচ্ছে সিকিম রেল প্রজেক্ট নিয়ে ততই সকলের প্রত্যাশা বেড়েই চলেছে। সেই দিন হয়তো বেশি দূরে নয় যখন কলকাতা থেকে সিকিম খুব সহজেই যাওয়া সম্ভব হবে। আর শিলিগুড়ি বা NJP থেকে ব্রেক জার্নি করতে হবে না। আর এর জন্য দ্রুত কাজ করে চলেছেন ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে শ্রমিকরা। এমনিতে বিগত কয়েক বছর আগের এবং বর্তমান সময়ের রেল ব্যবস্থাকে দেখলে আকাশ পাতাল তফাৎ চোখে পড়বে। এখন রেলে ভ্রমণ করা আরো সহজ হয়ে উঠেছে। ট্রেনেও যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে যাত্রীদের কথা ভাবনা চিন্তা করে ভারতীয় রেলও একের পর এক কাজ করেই চলেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সিকিমের রেল প্রজেক্ট। সেবক থেকে রংপো অবধি শুরু হয়েছে রেলস্টেশন তৈরি করার কাজ। তৈরি হচ্ছে একের পর এক টানেল। এবার এই সিকিম রেল প্রজেক্ট নিয়েই বড়সড় মাইলস্টোন হাসিল করল রেল।
নতুন মাইলফলক ছুঁলো রেল
রংপো রেলওয়ে স্টেশনের কাজ চলছে জোরকদমে। মূলত তিনটি পর্যায়ে শেষ হচ্ছে, এর অধীনে প্রথম পর্যায়ে সেবক থেকে রেংপো, দ্বিতীয় পর্যায়ে রংপো থেকে গ্যাংটক এবং তৃতীয় পর্যায়ে গ্যাংটক থেকে নাথুলা পর্যন্ত রেল লাইন পাতা হবে। এদিকে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে চিন সীমান্তবর্তী সিকিমে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থাই বাড়বে না, দেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা এজেন্ডাও জোরদার হবে বলে খবর। এমনিতেই সিকিমের উচ্চাভিলাষী সেবক-রংপো রেলওয়ে প্রোজেক্ট নিয়ে সকলের মধ্যেই এক আলাদাই উত্তেজনা কাজ করছে। এবার এই উত্তেজনায় আরও একবার চার চাঁদ লেগে যেতে চলেছে। জানা যাচ্ছে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে যে ৬ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলায় অবস্থিত টি-০৬ এর কাজ ‘যুগান্তকারী’ ভাবে শেষ হয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে সেবক -রংপো নতুন রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় মাইলফলক অর্জন করেছে। ১২টি টানেলে খনন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
বড় ঘোষণা রেলের
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কালিম্পং জেলার তিস্তা লো ড্যাম পাওয়ার স্টেশন ৩-এর এনএইচপিসির কাছে অবস্থিত মূল সুড়ঙ্গ টি-০৬ এর দৈর্ঘ্য ৩৯৪৩ মিটার এবং ৫৭৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ইভাকুয়েশন টানেল। মূল টানেলটি ছোট হিমালয়ের দুর্বল এবং চ্যালেঞ্জিং ভূতাত্ত্বিক এবং ভূমিকম্পের অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে এবং শেষ কাজটির ক্ষেত্রে নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং পদ্ধতি (এনএটিএম) ব্যবহার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেবক -রংপো নতুন রেললাইন প্রকল্পের ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের সেবক এবং সিকিমের রংপো সংযোগকারী সেবক-রংপো প্রকল্পটি প্রায় ৪৪.৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৪ টি টানেল, ১৩ টি বড় সেতু, ৯ টি ছোট সেতু এবং ৫ টি স্টেশন দ্বারা চিহ্নিত হবে।
ফিরে দেখা
সেবকে এবং সিকিমের রংপোর মধ্যে মোট ৪৪.৯৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেল লাইন হয়েছে। যার মধ্যে ১৪ টি টানেল, ২২ টি সেতু থাকবে। সেইসঙ্গে যে যে স্টেশনগুলি থাকবে সেগুলি হল সেবক, রিয়াং, তিস্তা বাজার, মেল্লি এবং রংপো। ২০০৯ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। মাঝে কাজ আটকে থাকলেও পরে সেই কাজ আবার শুরু হয়। আর এখন এই কাজ প্রায় শেষের মুখে। অর্থাৎ এই রুটে ট্রেন চালু হতে আর বেশি সময় নেই। এখন পর্যটকরা চোখের নিমিষে সিকিমে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবেন।