শিলচরঃ এবার শিরোনামে NIT। মূলত ভারত বিরোধী পোস্টে লাইক করার ‘অপরাধ’-এ বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল এক বাংলাদেশি ছাত্রীকে। ঘটনাটি ঘটেছে এনআইটি শিলচরে। এমনিতে বিগত কিছু সময় ধরে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে তপ্ত বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে এবং নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন হয়েছে সে দেশে। কিন্তু তারপরেও অশান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না ওই দেশের। এদিকে বাংলাদেশে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এনআইটি শিলচরের কিছু শিক্ষার্থী প্রতিবাদ চলাকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত বিরোধী মন্তব্য করেছিলেন। এরপরেই বড় অ্যাকশন নিল এনআইটি শিলচর। এখন বাংলাদেশি পড়ুয়ার ভবিষ্যৎও রীতিমতো বিশ বাঁও জলে বলে মনে হচ্ছে।
অ্যাকশন NIT-র
NIT কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ভারতবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের এই ডিগ্রি দেওয়া উচিত কি না তা এখন পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পড়ুয়া সম্প্রতি ডিগ্রি সম্পন্ন করেছে। ইতিমধ্যে ওই ছাত্রী নিজের দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন। এনআইটি সূত্রে খবর, সোমবার সকালে ওই বাংলাদেশি ছাত্রীকে করিমগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যান ওই ছাত্রী। যদিও এহেন দাবিকে অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে শুধু ছাত্রীই নয়, বাংলাদেশের এক ছাত্রও ভারত বিদ্বেষী পোস্ট করে ভাইরাল হয়েছে।
এনআইটির পরিচালক অধ্যাপক দিলীপ কুমার বৈদ্য সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই পুরো বিষয়টি একজন শিক্ষার্থীর, যিনি সম্প্রতি পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশে গিয়েছেন। ওই পড়ুয়ার নাম সাদাত হুসাইন আলফি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত-বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সে এখনো ডিগ্রি পায়নি। আমরা বর্তমানে এই পোস্টটি তদন্ত করছি। যেহেতু তিনি আর আমাদের প্রতিষ্ঠানে নেই এবং এই পুরো প্রতিবাদটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে ঘটেছে, তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’ এদিকে বাংলাদেশ পাঠানোর ব্যাপারটির বিষয়ে তিনি জানান, ওই ছাত্রী নিজের ইচ্ছাতেই কিছুদিনের জন্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। রবিবার ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন। তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
বিতর্ক শুরু
শনিবার আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন পড়ুয়া অভিযোগ করেছেন, এনআইটি শিলচর ক্যাম্পাসে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভারতের বিরোধী পোস্টের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নাম উঠে আসার পর নিরাপত্তার জন্য তাকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া। পুলিশের সহায়তায় তাকে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস প্রোগ্রামের আওতায় বৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশের ৭৭ জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশে পড়াশোনা করছেন।