প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বুধবার, অক্ষয় তৃতীয়ার পূর্ণলগ্নে মহাসাড়ম্বরে দিঘায় জগন্নাথধামের (Digha Jagannath Temple) দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দিন দেখার জন্য বহু পর্যটক এবং পুণ্যার্থীদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছিল আনন্দ এবং উৎসাহ। উদ্বোধনের মাত্র ২-৩ ঘণ্টায় লাখ লাখ ভক্তের ঢল পড়ে গিয়েছিল। ওয়েস্টবেঙ্গল হিডকো এই মন্দির নির্মাণ করেছে। প্রায় ২১৩ ফুট উচ্চতা। পুরীর আদলে নির্মিত হয়েছে এই মন্দির। আর এবার এই মন্দির নিয়েই শুরু হল জোর বিতর্ক। অভিযোগ এতটাই গুরুতর যে এবার এই নিয়ে ওড়িশার আইনমন্ত্রী দিলেন তদন্তের নির্দেশ।
ঘটনাটি কী?
অভিযোগ উঠেছে যে সম্প্রতি দিঘায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে জগন্নাথ মন্দিরকে নির্মাণ করেছে সেখানকার মূর্তি নাকি পুরীর নবকলেবরের অতিরিক্ত কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আর তাই নিয়েই শুরু হয়েছে এক নয়া বিতর্ক। আর এই বিষয়ে আসল সত্যিটা কী তা জানার জন্য গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার তদন্তের দিয়েছে ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন। আশা করা যাচ্ছে এই তদন্তের মাধ্যমেই শেষপর্যন্ত জানা যাবে যে ২০১৫ সালে নবকলেবর অনুষ্ঠানে যে বাড়তি নিম কাঠ বেঁচেছিল সেটা দিঘার মন্দিরে মূর্তি তৈরির জন্য ব্যবহার হয়েছিল কি না। আসলে এই তদন্তের মূল লক্ষ্য হল পুরীর মন্দিরের মূর্তির পবিত্রতা সুরক্ষিত রাখা।
“জগন্নাথ ধাম” তকমা অপসারণের দাবি
প্রতি ১২ বা ১৯ বছর অন্তর পুরীর মন্দিরে ‘নবকালেবর’ নামে একটি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরীর মন্দিরে শ্রী জগন্নাথের মূর্তি, দেবী সুভদ্রা এবং ভগবান বলভদ্র এর মূর্তি নতুন করে তৈরি হয়। সেই মূর্তি তৈরি নিয়েও রয়েছে নানা বিশ্বাস, আস্থা। কিন্তু অভিযোগ উঠছে এবার সেই নিম কাঠের অবশিষ্ট দিয়ে নাকি বাংলার জগন্নাথ মন্দিরে মূর্তি নির্মাণ হয়েছে। যদিও এই কারণ ছাড়াও পুরীর মন্দিরের পুরোহিত, ভক্ত, পণ্ডিত এবং সেবায়েতদের কেউ কেউ দিঘা মন্দির থেকে “জগন্নাথ ধাম” তকমাটি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। যার ফলে রাজ্যজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিক্ষোভের আগুন চারিদিকে ছড়ানোর আগে মন্ত্রী হরিচন্দন এসজেটিএ-র প্রধান কর্ণধার অরবিন্দ পাধীকে একটি চিঠি লিখে সমগ্র ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত করার আবেদন করেন।
কী বলছেন রাজেশ দ্বৈতাপতি?
এদিকে পুরীর বাড়তি কাঠ দিয়ে দিঘার মূর্তি তৈরির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরীর সেবাইতরা অনেকেই বেশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের মতে, পুরীর নিজস্ব যে পরিচিতি রয়েছে সেটা নিয়ে কথা উঠছে। এ বিষয়ে ‘দ্বৈতাপতি নিযোগ’-এর সম্পাদক রাজেশ দ্বৈতাপতি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে আমি দিঘা মন্দিরে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেছি। কিন্তু আমি কখনও বলিনি যে পুরীর মন্দিরের কাঠ দিঘায় প্রতিমা তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এমনকি আমি বাংলা ভাষার কোনও টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে এ বিষয়ে কথা বলিনি।”
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তের চাপ কমিয়ে স্বস্তি দিচ্ছে সোনা-রুপোর দাম! রইল আজকের লেটেস্ট রেট
এদিকে আবার ওড়িশার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে দেখানো হয়েছে যে, দাশমহাপাত্র এক বাংলা মিডিয়ায় বলেছেন ২০১৫ সালের নবকলেবরের অবশিষ্ট নিম কাঠ ব্যবহার করে দিঘা মন্দিরের প্রতিমা তৈরি করেছেন। যদিও বা সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে যে ওই দ্বৈতাপতি কীভাবে পুরীর বাড়তি কাঠ পেলেন। অন্যদিকে দিঘার মন্দিরকে জগন্নাথ ধাম বলার পরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্যান্ড আর্টিস্ট সুদর্শন পট্টনায়ক। তিনি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন যে পৃথিবীতে একটাই জগন্নাথধাম রয়েছে যেটা পুরীতে অবস্থিত। এবার অন্য কোনও মন্দিরকে এটা বলা হলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে পুণ্যার্থীদের মনে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |