প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: পুনরায় ফিরে এল করোনার আতঙ্ক। ২০১৯ এর শেষে প্রথম চিন থেকেই শুরু হয়েছিল করোনার দাপট। ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে জালের মত ছড়িয়ে পড়েছিল সেই মহামারী। তারপর একের পর এক ঢেউ। তছনছ করে দিয়েছিল বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মানুষের জীবন। অবস্থা এতটাই শোচনীয় ছিল যে ৫ বছর পর আজও সেই লাগামছাড়া সংক্রমণ, অক্সিজেনের জন্য হাহাকার, মৃত্যুমিছিল এর ক্ষত এখনও স্পষ্ট। আর এই আবহে ফের ভয় ধরাচ্ছে চিনের নতুন ভাইরাস আতঙ্ক।
জানা গিয়েছে, এই মুহুর্তে চিনে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস অর্থাৎ HMPV সহ একাধিক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকহারে। যার ফলে আক্রান্ত হচ্ছে মূলত শিশু ও কিশোররা। সরাসরি ফুসফুসে হানা দিচ্ছে এই ভাইরাস। এরফলে সংক্রমিত হয়ে হচ্ছে ‘হোয়াইট লাংস’। বিভিন্ন মিডিয়া মারফৎ জানা গিয়েছে চিনে এই রোগের কারণে একাধিক শিশু বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। আর সেই ছায়া এবার দেখা গেল ভারতে। HMPV তে আক্রান্ত হয়েছে বেঙ্গালুরুর এক শিশু।
আক্রান্ত ৮ মাসের শিশু
সূত্রের খবর, চিনের এই HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আট মাসের এক শিশু। শিশুটি তার পরিবারের সঙ্গে বেঙ্গালুরে থাকে। কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই শিশুটিকে বর্তমানে ব্যাপিস্ট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিগত কয়েকদিন ধরেই জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিল শিশুটি। উপসর্গ বুঝে ইতিমধ্যেই আক্রান্ত শিশুর নমুনা পরীক্ষা প্রাইভেট হাসপাতালে করা হয়েছে। আর সেখানেই সেই শিশুর শরীরে মিলেছে চিনের এই নয়া ভাইরাসের হদিস। যদিও সরকারি ল্যাবরেটরিতে ওই শিশুর নমুনা পরীক্ষা এখনও করা হয়নি। এদিকে পরিবার সূত্রে দাবি সম্প্রতি তারা কোনো বিদেশ ভ্রমণও করেনি। তাহলে কেন এই রোগে সংক্রমিত হল শিশুটি।
কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর?
এদিকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে যে চিনের এই নয়া আতঙ্ক HMPV নাকি অনেকটা করোনা ভাইরাসের মতোই। মূলত শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিদেরকেই এই ভাইরাস আক্রমণ করছে। তবে মূলত ১১ বছরের কমবয়সীদের মধ্যেই এই ভাইরাসের হদিস মিলছে। কিন্তু চিনে এই ভাইরাসের স্ট্রেন সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। অর্থাৎ চিনে এইমুহুর্তে কোন স্ট্রেনের ভাইরাস ছড়াচ্ছে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তাই ট্রিটমেন্ট নিয়েও বেশ সমস্যায় পড়েছে চিকিৎসকরা।
অন্যদিকে দেশে প্রথম HMPV আক্রান্তের খবর মিলতেই গোটা দেশ জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দিল্লি ও মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়েছে সেই সতর্কতা। জানা গিয়েছে কোভিডকালের মতো পরিকাঠামোগত প্রস্তুতি নিতে ও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। কড়াকড়ি করা হচ্ছে কুম্ভ মেলাতেও।