সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গোটা বিশ্ব এখন ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে কাঁপছে! আর ঠিক তখনই ভারতের ভাগ্য খুলতে চলেছে! এমনই ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। তিনি মনে করছেন, আন্দামান সাগরের তলদেশে লুকিয়ে রয়েছে বিরাট তেলের ভান্ডার (Oil Reserve), যা কিনা ভারতের অর্থনীতিকে নতুন সংজ্ঞা দিতে পারে।
বলে রাখি, বর্তমানে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। দেশের মোট চাহিদার 85%-এর বেশি তেলই ভারত বিদেশ থেকে আমদানি করে। আর সেই নির্ভরতা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের অর্থনৈতিক গতিকে পিছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। তবে এবার সেই চিত্র বদলাতে চলেছে।
কোথায় এই তেলের খনি?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন, আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধানে বিরাট সাফল্য আসতে চলেছে। তার বক্তব্য, আমাদের হাতে এরকম সম্ভাবনা রয়েছে, যা গায়ানার মত আমূল বদলে দিতে পারে।
বলে রাখি, গায়ানাতে 2015 সালে মার্কিন সংস্থা Hess Corporation এবং চিনের সংস্থা CNOOC বিশাল তেলের খনি আবিষ্কার করেছিল। বর্তমানে তাদের রিজার্ভে প্রায় 11.6 বিলিয়ন ব্যারেলের বেশি তেল রয়েছে, যাতে করে তারা বিশ্বের 17তম বৃহত্তম তেল উৎপাদন সংস্থায় পরিণত করেছে।
ভারতেও এবার হবে গায়ানার পুনরাবৃত্তি?
যদি সত্যিই আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে গায়ানার মতো তেলের ভান্ডার খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তা ভারতের কাছে হতে পারে পুরো গেম চেঞ্জার। কারণ, দেশে উৎপাদন বাড়লে আমদানি অনেকটাই কমবে। ফলে তেলের খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় হবে। পাশাপাশি ভারতের বাজারে তেলের দামও কমবে।
জানিয়ে রাখি, বর্তমানে ভারতে তেল উত্তোলন হয় মূলত অসম, গুজরাট, রাজস্থান, মুম্বাই এবং কৃষ্ণ ও গোদাবরী অববাহিকায়। পাশাপাশি বিশাখাপত্তনম, ম্যাঙ্গালোর ও পুদুচেরিতে রয়েছে তেলের সংরক্ষণাগার। তবে আন্দামানে এরকম বৃহৎ তেলের ভান্ডার আবিষ্কৃত হলে তা ভারতের জন্য বিরাট মাইলফলক।
আরও পড়ুনঃ একধাক্কায় অনেকটাই বাড়ল ক্রুড অয়েলের দর! ভারতে পেট্রোল, ডিজেলের দামের কী হবে?
কারা করছে এই অনুসন্ধান?
সূত্র বলছে, বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ONGC এবং অয়েল ইন্ডিয়া আন্দামান ও নিকোবর অঞ্চলে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধানের কাজ চালাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে তারা গভীর সমুদ্র ড্রিলিং চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, ছোটখাট আবিষ্কার তো হচ্ছেই। তবে যদি গায়ানার মতো বড় রিজার্ভ খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ভারতের অর্থনীতি 3.7 ট্রিলিয়ন ডলার থেকে লাফিয়ে 20 ট্রিলিয়নে পৌঁছে যেতে পারে।