বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভাল ফ্যাসাদে পড়েছে পাকিস্তান! ঘরে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির হাতে পেটানি খাওয়ার পাশাপাশি জল যন্ত্রণা নিয়ে দুঃসময় কাটাচ্ছে পশ্চিমের দেশ। পহেলাগাঁও জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে শায়েস্তা করতে নানান পদক্ষেপের পাশাপাশি সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি (Indus Water Treaty) স্থগিত করেছিল নয়া দিল্লি। ভারতের এমন কড়া পদক্ষেপের পরই ও দেশের তরফে কেঁদে কেটে দিল্লির কাছে বহুবার কাতর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আপাতত যা খবর, সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সিন্ধু ও তার উপনদীর জল না পেয়ে ভারতকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে অন্তত 4টি চিঠি দিয়েছে পাকিস্তান। তবে ভারত রয়েছে ভারতের সিদ্ধান্তেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফে বারংবার সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জল এবং রক্ত একসাথে কখনই বইতে পারে না।
ফের সুর নরম পাকিস্তানের
বিগত কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানের জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব সৈয়দ আলি মোর্তাজা ভারতের জলশক্তি উন্নয়ন মন্ত্রককে পাঠানো চারটি চিঠিতে বারংবার সুর নরম করে জল চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করে দেখার কথা জানানো হয়েছে। জানা যায়, ওই চিঠিগুলি জলশক্তি উন্নয়ন মন্ত্রক পাঠিয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের কাছে। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্লজ্জ পাকিস্তানের কাতর অনুরোধ সত্বেও পুরনো সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরে দাঁড়ায়নি দিল্লি।
দিল্লি কি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে?
পাকিস্তানের তরফে বারবার সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি নিয়ে করুণ আবেদন এলেও দিল্লি কিন্তু পুরনো সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায়নি। কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পাকিস্তান যতদিন না পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ করবে, ততদিন সিন্ধু জলচুক্তিও রদ থাকবে। বলে রাখি, বেশ কয়েকবার নানান সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, জল ও রক্ত একসাথে বইতে পারে না। এখন পাকিস্তানের সাথে যদি কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তবে তা হবে শুধুই, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও সন্ত্রাসবাদ চিরতরে মুছে ফেলার বিষয়ে।
ভারতের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রীও
প্রথমদিকে অপরাধ করেও গলা ফাটিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। ভারতের তরফে প্রত্যাঘাত পেয়ে একেবারে ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নানান রোয়াব ঝাড়তে থাকেন পাক প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ও দেশের ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা। তবে সম্প্রতি জল সঙ্কট শুরু হতেই ভারতের সাথে শান্তি আলোচনার বার্তা দিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতের সাথে বাণিজ্য, জল চুক্তি ও সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে কথা বলতে আমরা আগ্রহী। তবে ভারতের তরফে একবারও আশানুরূপ সাড়া পাননি তিনি।
অবশ্যই পড়ুন: শ্রেয়স আইয়ারের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা! জেল হবে ভারতীয় তারকার?
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, ভারত সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত করার পরই পাকিস্তানের একাধিক রাজনীতিবিদ পুনরায় এই চুক্তি চালু করার জন্য শেহবাজ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। তাছাড়াও জল সঙ্কটের আশঙ্কায় পাক সরকারের বহু মন্ত্রীরাই চাইছেন ভারতের সাথে নরম ভাষায় কথা বলে ফের সিন্ধুর জল ফিরে পেতে। কিন্তু এদেশ যে আর পাকিস্তানের নরম কথায় গলবে না তা বারংবার নিজের বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ফলত, চারবার হোক কিংবা চোদ্দ বার, পাকিস্তানের কান্নাকাটি দেখে আর আগের ভুল করবে না দিল্লি।