প্রীতি পোদ্দার, চেন্নাই: অল্প দূরত্ব হোক কিংবা বেশি দূরত্ব, সাধারণ মানুষের যাচ্ছে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী যাতায়াতের মাধ্যম হল ট্রেন। তাইতো ভারতীয় রেলকে দেশের লাইফলাইন বলা হয়ে থাকে। তবে যাতায়াতের সবচেয়ে প্রিয় মাধ্যম হলেও রেল নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই যাত্রীদের। সে রেল দুর্ঘটনা হোক বা পরিষেবায় গাফিলতি, দেশের একাধিক প্রান্ত থেকেই এমন অভিযোগ সামনে আসছে। যার জেরে খানিক ব্যতিকগ্রস্ত ভারতীয় রেলও।
বিগত কয়েক মাস ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর উঠে আসছে। কখনও কলকাতা কখনও গুজরাট, তো আবার কখনও মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে এই ঘটনা ঘটেছে। আর এবার নতুন বছর পড়তেই তামিলনাড়ুতে ঘটে গেল বড় এক দুর্ঘটনা। সক্কাল সক্কাল ট্রেনের পাঁচটি বগি হঠাৎ করে লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে গেল রেললাইন থেকে। ঘটনায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এলাকা জুড়ে।
ঘটনাটি কী?
খবর অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ভোর ৫ টা নাগাদ যাত্রিবাহী একটি ট্রেন ভিলুপুরম থেকে পুদুচেরির দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু ভিলুপুরম রেল স্টেশন ছেড়ে ট্রেন খানিকটা এগোতেই রেললাইনে বিকট শব্দ শোনে ট্রেন চালক। এমনকি সেই বিকট আওয়াজে ভয়ানক ঝাঁকুনিতে ট্রেনটি দুলে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের সুরক্ষার্থে দ্রুততার সঙ্গে চালক ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে দেন এবং রেল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর খবর পাওয়া মাত্রই মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন রেলকর্মীরা এবং যাত্রীদের ট্রেন থেকে ধীরে সুস্থে নামিয়ে দেয়। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর মেলেনি। আনুমানিক ৫০০ জন যাত্রী ছিল সেই ট্রেনে।
কী কারণে ঘটল এই ঘটনা?
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত যাত্রীকে আপাতত নিরাপদে ট্রেন থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হল তা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। কিন্তু প্রাথমিক অনুমান করা হচ্ছে যে রেললাইনের উপর পড়ে থাকা ভারী কোনও বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা লাগাতেই পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। আর তখনই সেই ভয়ংকর বিকট আওয়াজ হয়। আর এই ঘটনার ফলে আজ সকাল ৮.৩০টা পর্যন্ত ভিলুপুরম রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ যেমন খেলবে তেমন টাকা, স্ত্রীদের উপরেও নিষেধাজ্ঞা! টিম ইন্ডিয়ার প্লেয়ারদের ডানা ছাঁটছে BCCI
প্রসঙ্গত, ভিলুপুরম স্টেশন থেকে রেলপথে পুদুচেরির দূরত্ব প্রায় ৩৮ কিলোমিটার। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ট্রেনটি আজ যাত্রা শুরুর সময় বিনা ঝঞ্ঝাটে এগোতে থাকলেও যাত্রীবোঝাই এই ট্রেন কিছুটা যেতেই বিকট শব্ধ হয়। শব্দ শুনেই সকলে মিলে গিয়ে দেখা যায় ট্রেন থামিয়ে দিয়েছে চালক। আর পাঁচটি কামরা লাইন থেকে বেরিয়ে এসেছে। চালক যদি সঠিক সময়ে ট্রেন থামিয়ে না দিত, তাহলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। এমনকি যাত্রীদের মৃত্যুও পর্যন্ত হত।