বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারত-পাক সংঘাত এখন চরমে। রাত হলেই চোরের মতো অন্ধকারে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তান (Pakistan)। অপকর্মের যোগ্য জবাব দিচ্ছে ভারতও। এমতবস্থায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে একেবারে তলানিতে ঠেকেছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। ভারত সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই, পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি যখন এমন, ঠিক সেই পর্বে ভারতীয় পণ্যের অভাবে একেবারে মাথায় হাত পড়েছে পশ্চিম দিকের ব্যবসায়ীদের।
একই সূত্র ধরে, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা বেশ কিছু পণ্যের জন্য আংশিক হলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে ভারতের বাজারেও! বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পশ্চিম দিকের দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যগুলির অভাব দেখা দিলে মধ্যবিত্তের হেঁসেলে টান পড়তে পারে! সেই সাথেই পাকিস্তানে উৎপাদিত পণ্যগুলির দামও বাড়তে পারে হু হু করে! যদিও, ভারতের কাছে ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়দাতা পাকিস্তানের বিকল্প বাণিজ্য পথ খোলা রয়েছে।
পাকিস্তানের সাথে সংঘর্ষের আবহে দাম বাড়তে পারে এই পণ্যগুলির
প্রথমেই জানিয়ে রাখি, সন্ত্রাসবাদের দেশ পাকিস্তান থেকে ভারত মূলত খেজুর ও রক সল্ট ছাড়া খুব একটা কিছু সে অর্থে আমদানি করে না কেন্দ্র। পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের তালিকায় মশলা, ড্রাই ফ্রুটস, সুতির চাদর, শাল সহ অন্যান্য পণ্য থাকলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খেজুর ও রক সল্ট বা সন্দক লবণের জন্য পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল ছিল ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওদেশের সাথে উত্তেজনা চরমে ওঠায় ভারতীয় বাজারে রক সল্ট ও খেজুরের দামই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি হোলেসেলে রক সল্ট যেখানে প্রতি কেজিতে 26 টাকা ধরে বিক্রি হতো, আচমকা তা বেড়ে গিয়ে 50 থেকে 60 টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত খেজুরের দামও ভারতের বাজারে 5 থেকে 10 শতাংশ বৃদ্ধি পেতে দেখা গিয়েছে। একই সাথে, বেশ কিছু ড্রাই ফ্রুটসের দামও আংশিক ক্ষেত্রেই বেড়েছে ভারতীয় বাজারে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আগামী দিনে স্বল্প হলেও এই পণ্য গুলির দাম বাড়তে পারে!
বিকল্প পথ খোলা রয়েছে ভারতের
মূলত খেজুর ও ড্রাই ফ্রুটসের জন্য পাকিস্তানের ওপর এতদিন নির্ভর করে থাকলেও এই মুহূর্তে ভারতের কাছে একাধিক বিকল্প দেশ রয়েছে, যেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ সমগোত্রীয় পণ্য আমদানি করতে পারে ভারত। জানিয়ে রাখি, খেজুর, কিশমিশ ও ডুমুরের মতো শুকনো ফলের জন্য বর্তমানে পাকিস্তানের পরিবর্তে আফগানিস্তান, সৌদি আরব ও দুবাইয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ভারত।
বলা বাহুল্য, পাকিস্তান থেকে একসময় সবচেয়ে বেশি আমদানিকৃত পণ্য অর্থাৎ রক সল্ট ক্রয়ের বিকল্প রয়েছে ভারতের কাছে। পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ধাক্কা খাওয়ায় বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সন্দক লবণ আমদানি করে দিল্লি। এছাড়াও ইরান, জার্মানি, তুরস্ক ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ থেকে রক সল্ট বা শিলা লবণ কিনে নেয় ভারত।
অবশ্যই পড়ুন: নেতৃত্ব ফিরে পেতে চেয়েছিলেন বিরাট! আশা পূরণ না হওয়ায় অবসর? প্রকাশ্যে আরও দুই চাঞ্চল্যকর তথ্য
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায়, মূলত সন্দক লবণের টান পড়েছে দেশের একাধিক পরিবারের হেঁসেলে। শোনা যাচ্ছে, আগামী দিনগুলিতে যাতে লবনের কোনও অভাব না হয় সেজন্য নাকি দেশের অনেকেই কেজি কেজি করে লবণ কিনছেন। তবে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের দাবি, রক সল্ট এতটাও অত্যাবশ্যক সামগ্রী নয়, যা বাদ দিয়ে থাকা যাবে না।